উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ফলে আরও সীমিত হয়ে পড়বে দেশটির রফতানি ও বিনিয়োগ খাত। ফলে বার্ষিক একশ কোটি মার্কিন ডলারের রফতানি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে পিয়ংইয়ং। শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের খসড়া উপস্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে উত্তর কোরিয়ার কয়লা, আকরিক লোহা, সীসা এমনকি সী ফুড রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আনার কথা বলা হয়।এসব পণ্য রফতানি করে পিয়ংইয়ং-এর প্রতি বছর ৩শ কোটি মার্কিন ডলার আয় হয়।নিষেধাজ্ঞার ফলে রফতানি আয় কমবে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ।
এরপরও উত্তর কোরিয়া দায়িত্বশীল আচরণ না করলে প্রয়োজনে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেন, “কয়েক দশকে সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে উত্তর কোরিয়া। আজ পুরো বিশ্বই দেশটির বিরুদ্ধে। এবার পিয়ংইয়ংকে নিজেদের খামখেয়ালীপনার দায়িত্ব নিতে হবে। কিম জং উন সরকার পরমাণু কর্মসূচি স্থগিত করবে নাকি নিজের দেশের রাজস্ব ও জনগণের জীবিকার পথ বন্ধ করবে-সেটা তারাই ঠিক করুক।”
এদিকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে এবার সমর্থন দিয়েছে মিত্র দেশ চীনও। একইসাথে পিয়ংইয়ংয়ের প্রতি সংযত আচরণের আহ্বানও জানায় দেশটি।
জাতিসংঘে চীনের প্রতিনিধি লিউ জিয়েই বলেন, “উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ও ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রযুক্তি ব্যবহারে চীনের সমর্থন নেই। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং সারা বিশ্বের স্বার্থ পরিপন্থি। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রকরণের কোনো বিকল্প নেই।”
তবে সংকট নিরসনে নিষেধাজ্ঞা নয় বরং আলোচনা ছাড়া বিবদমান পক্ষগুলোর সামনে কোনো পথ নেই বলেও মনে করছে চীন। এব্যাপারে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, “নিষেধাজ্ঞা জরুরি। কিন্তু এটা চূড়ান্ত সমাধান নয়। পরমাণু সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে একসাথে আলোচনায় বসতে হবে। কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার পথ খুঁজে বের করতে হবে। এতে সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি হবে পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা কমবে।”
চলতি বছর অন্তত ১৫ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। এতে মিত্র চীন, প্রতিবেশি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া, প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রসহ ক্ষুব্ধ বিভিন্ন দেশ দফায় দফায় উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বাড়ালেও এখন পর্যন্ত এ নিয়ে তোয়াক্কা নেই দেশটির।
Leave a reply