বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সন্ত্রাসী সরবরাহ হতো: আসামের মুখ্যমন্ত্রী

|

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০১-২০০৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সন্ত্রাসী সরবরাহ করা হতো বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সম্প্রতি দেশটির সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনটিতে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের দুর্নীতি ও তার কারণে সৃষ্ট গণতান্ত্রিক ও নিরাপত্তা সংকটের কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতে বিএনপি সহিংস রাজনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিএনপি নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

রোববার (২০ নভেম্বর) প্রকাশিত ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে আসামের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা এটি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি।

প্রতিবেদনে উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন ক্যাবলের একটি সিরিজের বরাতে তারেক রহমান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘হিংসাত্মক রাজনীতির প্রতীক’ এই পলাতক ও দণ্ডিত অপরাধী নেতার বিরুদ্ধে অপকর্মের দীর্ঘ তালিকা রয়েছে। বিএনপি সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে হাঁটতে চাইলেও এর পেছনে প্রথম ও প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের শীর্ষ নেতা তারেক রহমান।

বিএনপি-জামায়াত শাসনের পতনের ঠিক পরে উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন ক্যাবলের একটি সিরিজে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলের কারণে দেশে ঘুষ, আত্মসাৎ ও দুর্নীতির সংস্কৃতির অনুকূলে পরিবেশ গড়ে উঠেছে ও সেটি বজায় থাকছে। এটি মার্কিনীদেরও বড় ক্ষতি করেছে।

উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া তথ্যে আরও বলা হয়, জনসাধারণের অর্থের মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার চুরি মধ্যপন্থী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করেছে।’

ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন আরও বলা হয়েছে, তারেক রহমানকে বাংলাদেশের ‘বিকল্প সরকার ও সহিংস রাজনীতির’ প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর একটি গোপন তারবার্তা পাঠান। যেখানে তিনি তারেকের সুস্পষ্ট দুর্নীতি মার্কিনীদের সুনির্দিষ্ট মিশনের লক্ষ্যকেও মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে উল্লেখ করেন।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরের বেশি সময় বাকি থাকতেই রাজনৈতিক দৃশ্যপট অস্থির হয়ে উঠেছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা বারবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘উৎখাত’ করার আহ্বান জানাচ্ছে। এমনকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিতে ১০ ডিসেম্বর বড় জমায়েত করার ডাক দিয়েছে। সম্প্রতি এক জনসভায় বিএনপির শীর্ষ নেতা আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে জিয়ার (বেগম খালেদা ও তারেক জিয়া) নির্দেশে দেশ পরিচালিত হবে। এতে আভাস পাওয়া যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ইসলামী গোষ্ঠীটি যেই বিরোধী জোট গঠন করেছে তা সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে রাজপথে সহিংস আন্দোলন করতে পারে। যদিও এসব আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ও বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অর্থনীতি ব্যাহত হলে সেটি বরং বিএনপির জন্যই নেতিবাচক হতে পারে বলে মত অনেকের।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply