কুর্দি বিদ্রোহীদের দমনে সিরিয়ায়, তুরস্কের সম্ভাব্য অভিযান নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু, এ অবস্থায়ও আন্তর্জাতিক মহলের সংযত থাকার আহ্বানকে তোয়াক্কা করছেন না প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। উল্টো হুমকি দিয়েছেন, গোড়া থেকে মূলোৎপাটন করা হবে কুর্দি সন্ত্রাসবাদের। আর, নিজেদের সীমান্তে হামলাকারীদের মোক্ষম জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরাকও।
তুরস্কে কালো তালিকাভুক্ত বিদ্রোহী সংগঠন ঘোষিত সন্ত্রাসীগোষ্ঠী- পিকেকে ও এসডিএফ চলমান বিমান অভিযানের মূল টার্গেট। যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। হুমকি দিয়েছেন, শীঘ্রই সর্বাত্মক সামরিক তৎপরতার মাধ্যমে নির্মূল করা হবে সন্ত্রাসবাদের চিহ্ন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, গেলো কয়েকদিনে যুদ্ধবিমান-গোলাবারুদ আর ড্রোনের মাধ্যমে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে সন্ত্রাসীদের আস্তানা। খুব শীঘ্রই ট্যাংক, সেনাবাহিনী আর মিত্র দেশগুলোর সহযোগিতায় শুরু হবে স্থলাভিযান। গোড়া থেকে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করাই আমাদের উদ্দেশ্য। কারণ, তুর্কিদের নিরাপত্তা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষাই আমাদের একমাত্র টার্গেট। সুতরাং, যারা কলকাঠি নাড়ছে; তারা এখনই সতর্ক হোন।
এদিকে, তুর্কি বিমান অভিযানের শিকার ইরাকের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সীমান্ত নীতিমালা লঙ্ঘনকারীদের মোক্ষম জবাব দেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানি বলেন, ইরান ও তুরস্ক থেকে যেসব হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো সফলভাবে ঠেকিয়েছে ইরাক। তবে, সীমান্ত হামলা অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক। আগামী দু’দিনের মধ্যে জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত হবে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার এবং সেনা মোতায়েনের বিষয়গুলো। হামলাকারীদের মোক্ষম জবাব দেয়া হবে।
সিরিয়ায় বিমান হামলার পর তুরস্ক স্থলাভিযানের ঘোষণা দিলে নড়েচড়ে বসে আন্তর্জাতিক মহল। বারবারই তুরস্কের প্রতি আসছে সংযত থাকার তাগিদ দিয়ে আসছে তারা। এ অবস্থায় পরামর্শ দিয়েছে- আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সংলাপে বসতেও।
তুরস্ককে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, আঞ্চলিক উত্তেজনা না ছড়াতে তুরস্ককে তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। ধৈর্য্য ধারনের পরামর্শসহ নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে মানবাধিকার রক্ষার। সিরিয়ার ব্যাপারে মহাসচিবেরর আহ্বান- অস্ত্রবিরতি চুক্তি মেনে চলুন। বজায় রাখুন সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা। ইরাককেও বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের।
এ প্রসঙ্গে পেন্টাগনের উপ-মুখপাত্র সাবরিনা হক বলেছেন, তুরস্কে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। যার পাল্টা জবাব দিতে বিদ্রোহী ঘাঁটিগুলোয় অভিযান চালাচ্ছে এরদোগান প্রশাসন। বিবদমান পক্ষগুলোকে বলবো সংযত থাকুন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য- আইএসকে নিশ্চিহ্ন করা। কিন্তু, ছোটখাটো অভিযানের কারণে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত দুইদিনে কুর্দি বিদ্রোহীদের আস্তানা লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছে ৭০টির বেশি রকেট। যাতে, ৯০টি স্থাপনা ধ্বংসের পাশাপাশি ২০০’র মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
/এসএইচ
Leave a reply