কাতার বিশ্বকাপ ৪ দিনের মধ্যে রূপ নিয়েছে অঘটনের আসরে। শক্তিশালী জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রচিত হয়েছে জাপানের রূপকথা। হান্সি ফ্লিকের দলের কাছে হয়তো আবার দুঃস্বপ্নে হানা দেয়ার মতো আরেক উপলক্ষ হাজির হলো বুধবার। গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ার ব্যর্থতা ধুয়েমুছে ফেলার জার্মান প্রত্যয় তাই ধাক্কা খেলো প্রথম ম্যাচেই। একই গ্রুপে স্পেনের মতো পরাশক্তি থাকায় নয়্যার-মুলারকে হয়তো চোখ রাঙাচ্ছে আরও একবার প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ার শঙ্কা।
সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার পরাজয়ের পর জাপানের কাছে জার্মানির পরাজয়ে কাতার বিশ্বকাপকে দর্শকদের কাছে মনে হতেই পারে এক বিস্ময়কর রোলারকোস্টার রাইড। ম্যাচের ৮ম মিনিটে জার্মানির পোস্টে বল জড়ায় জাপান। সেটি অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ার পর প্রথমার্ধে জাপান যেন আর ম্যাচেই ছিল না। উল্টো বল দখলে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ইলকায় গুন্দোয়ানের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় জার্মানি। ম্যাচের ৩২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে জোশুয়া কিমিচ বল বাড়ান ডি বক্সের বামপ্রান্তে, লেফটব্যাক ডেভিড রাউমের উদ্দেশে। কিন্তু জাপান গোলরক্ষক শুইচি গোন্দা এগিয়ে গিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ফাউল করে বসেন রাউমকে। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। জার্মানরা সাধারণত জাতীয় দলের জার্সিতে পেনাল্টি খুব কমই মিস করে। সেই ধারা অব্যাহত রেখে গোন্দাকে পরাস্ত করেন গুন্দোয়ান।
জার্মান মেশিনের আক্রমণের তোড়ে দ্বিতীয়ার্ধেওই উড়ে যাবে জাপান; এমনটা যারা ভেবেছে তাদের দোষ দেয়া যায় না। তবে পাশার দান উল্টে যাওয়ার শুরু দ্বিতীয়ার্ধেই। জাপানের কোচ হাজিমে মরিয়াসুর কৌশল বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগে। জাপানও বাড়িয়ে দেয় আক্রমণের গতি। আর তার ফল জাপান পায় ৭৫ মিনিটে। রিতসু দোয়ানের দুর্দান্ত এক গোলে ম্যাচে সমতা ফেরায় জাপান।
তার ৮ মিনিট পরেই তাকুমা আসানোর গোলে এগিয়ে যায় জাপান। ডি বক্সের ডানপ্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে আসানোর দুর্দান্ত গোলে পরাস্ত হন ম্যানুয়েল নয়্যার। পিছিয়ে থাকার পর গোল শোধে মরিয়া জার্মানি চালায় একের পর আক্রমণ। এমনকি নয়্যারকেও সুইপার পজিশন থেকে অতিরিক্ত সময়ে মাঝমাঠেই বেশি দেখা গেছে। তবে গোল আর আসেনি। মাথা নিচু করেই তাই মাঠ ছাড়তে হয়েছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের। আর ইতিহাস সৃষ্টির আনন্দে মাতে এশিয়ান পরাশক্তি জাপান।
আরও পড়ুন: ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরতে না দেয়ায় মুখ ঢেকে জার্মানদের প্রতিবাদ
/এম ই
Leave a reply