টানটান উত্তেজনাকর ম্যাচে ঘানার বিরুদ্ধে ৩-২ ব্যবধানে জয় পেয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। এদিন, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দারুণ এক রেকর্ড গড়েছেন সিআর সেভেন। এ ম্যাচে প্রথম ও একমাত্র ফুটবলার হিসেবে পরপর পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করার অনন্য রেকর্ড গড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। অপরদিকে, ঘানা পিছিয়ে পড়েও বারবার ফিরে এসেছে জয়ের দাবিতে। পুরো ম্যাচে দারুণ লড়াই করলেও এদিন শেষ পর্যন্ত আর সহায় হলো না তাদের ভাগ্য।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিলো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল আর আফ্রিকার প্রতিনিধি ঘানা। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলেও প্রথমার্ধ শেষে গোলের দেখা পায়নি কোনোদলই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জমে ওঠে খেলা।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাস আবু আবুউদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় শুরু হয় ম্যাচটি।
ম্যাচের শুরু থেকেই মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাতে থাকে পর্তুগাল। ম্যাচের ৯ মিনিটেই ব্রুনো ফার্নান্দেসের বাড়ানো বলে নিশ্চিত গোল মিস করেন রোনালদো। এরপর, ১৪ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বলে মাথা ছোয়ালেও জালে জড়াতে পারেননি রোনালদো। ম্যাচের ২৮ মিনিটে পর্তুগিজ সুপারস্টার রোনালদো গোল করলেও তা বাতিল হয় ফাউলের জেরে। আর, খাদের কিনারা থেকে খেলায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ঘানা। যদিও প্রথমার্ধে পাওয়া জোড়া কর্নারের একটিও কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এ পর্যন্ত এগিয়ে রোনালদোরা। পুরো ম্যাচে ৬২ শতাংশ বল ছিল পর্তুগিজদের পায়ে, আর অন টার্গেট শট ছিল মাত্র ৫টি। আর মাত্র ৩৮ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখা ঘানা প্রথমার্ধে কোনো শটই নিতে পারেনি পর্তুগিজদের গোল অভিমুখে, আর পুরো ম্যাচে তাদের অন টার্গেট শট মাত্র তিনটি। কোনো গোল না হওয়ায় প্রথমার্ধ শেষ হয় 0-0 স্কোরলাইনে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মরিয়াভাব দেখা যাচ্ছিলো পর্তুগীজদের মাঝে। একের পর এক আক্রমণ তারা চালাতে থাকে ঘানার গোল পোস্টে। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতরে রোনালদোকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। আর সে পেনাল্টি থেকেই এ বিশ্বকাপের প্রথম গোল পান সিআর সেভেন। আর এ গোলের মাধ্যমে প্রথম ও একমাত্র ফুটবলার হিসেবে পরপর পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করার অনন্য রেকর্ড গড়লেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর অনন্য রেকর্ডের দিনে পিছিয়ে পড়েও দারুণ এক গোলে ম্যাচে ফেরে ঘানা। ৭৩ মিনিটে আহমেদ কুদোসের ক্রস থেকে অধিনায়ক আন্দ্রে আইয়ুর চোখ ধাঁধানো এক গোলে ম্যাচে ফেরে সমতা। এবারের বিশ্বকাপে আফ্রিকার কোনো দলের প্রথম গোল এটি।
কিন্তু, ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ঘানাইয়ানদের আবারও পেছনে ফেলে পর্তুগিজরা। হোয়াও ফেলিক্স গোল কিপারকে ফাঁকি দিয়ে জালে বল জড়িয়ে ফেলেন। এর ঠিক আড়াই মিনিটের মাথায় আবারও গোল পায় পর্তুগাল। এবার ব্রুনো ফার্নাদেসের অ্যাসিস্ট থেকে গোল ব্যবধান ৩-১ করেন রাফায়েল লিয়াও।
এরপর, চলে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে মাঠ থেকে তুলে নেয়া হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, হুয়াও ফেলিক্স ও বার্নার্দো সিলভাকে। আর, এর ঠিক এক মিনিট পরই আবারও ঘানার হয়ে ব্যবধান ৩-২ করেন বুকারি। বক্সের ভেতরে একদম অরক্ষিত অবস্থায় সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। বল পাওয়ার সাথে সাথে দর্শনীয় এক হেডে গোল ব্যবধান কমান এ ঘানাইয়ান।
ম্যাচের একদম শেষ মিনিটে ঘানার আক্রমণ ফিরিয়ে বল নিজের আয়ত্তে নেন পর্তুগীজ গোলরক্ষক ডি কস্তা। কিন্তু তার পেছনে পোস্টের কাছে ইনাকি উইলিয়ামসকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেননি। মাটিতে ছাড়ার সাথেসাথে ইনাকি বল নিজের আয়ত্বে নিলেও পা পিছলে যাওয়ায় শট নিতে পারেননি পোস্টে। যা কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলো রোনালদোসহ পর্তুগিজদের মনে।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ৩-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পর্তুগিজরা।
/এসএইচ
Leave a reply