কাতার বিশ্বকাপের অন্যতম রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ উপহার দিয়ে শেষ ষোলোর আশা কোনোমতে বাঁচিয়ে রেখেছে সার্বিয়া ও ক্যামেরুন। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফেরে যাওয়ার পর জয় ভিন্ন কিছুই না ভাবা এই দুই দল ড্র করেছে ৩-৩ গোলে। প্রথমার্ধে ক্যামেরুন লিড নেয়ার পর সার্বিয়া করে টানা তিন গোল। এরপর দুইটি গোল পরিশোধ করে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে দেয় আফ্রিকান সিংহরা। কিন্তু ত্রিশ মিনিটে কোনো গোল না হওয়ায় ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয় দুই দল।
দোহার আল জানোব স্টেডিয়ামে ম্যাচের দুই দলই নিজেদের খেলা গুছিয়ে নিতে সময় নেয়। আক্রমণভাগে সৃষ্টিশীলতার চেয়ে দুই দলের রক্ষণে শারীরিক শক্তির প্রকাশই দেখা গেছে বেশি। আর এর ধরনের ম্যাচে স্কোরের জন্য বেশি নির্ভর করা হয় সেটপিস থেকে। ম্যাচের ২৯ মিনিটে বামপ্রান্ত থেকে নেয়া এক ইনসুইঙ্গার কর্নার সার্বিয়ান পোস্টের সামনের প্রান্তে ক্যামেরুনের এক খেলোয়াড়ের মাথায় লেগে চলে যায় পোস্টের অপর প্রান্তে। ইয়ান চার্লস কাস্তেলেত্তোর জন্য সহজ ট্যাপ ইনে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি। ক্যামেরুনের অগ্রগামিতায় শেষ হওয়ার পথে যখন ছিল প্রথমার্ধ; তখনই সার্বিয়া পালটে দেয় সেই চিত্র। অতিরিক্ত সময়ের প্রথ্যম মিনিটে ডুসান তাদিচের ফ্রিকিকে ডি বক্সে অনেকটাই অরক্ষিত স্ট্রাহিনিয়া পাভলোভিচ মাথা ছুঁইয়ে সমতায় ফেরান সার্বিয়াকে।
সেই ছন্দ দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে সার্বিয়াকে ম্যাচে এগিয়ে নেন সের্গেই মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচ। অতিরিক্ত সময়ের ৩ মিনিটে এই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার বাম পায়ের শট নেন ডি বক্সের সামনে থেকে। আর পরাস্ত হন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক এপাসি। দারুণভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজদের অনুকূলে নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে মিত্রোভিচের গোলে ৩-১ ব্যবধানে লিড নেয় সার্বিয়া। ম্যাচের নাটকীয়তা এতেই শেষ হয়ে গেল কিনা, এমন প্রশ্ন যখন আসলো, তখনই প্রতিক্রিয়া দেখায় ক্যামেরুন। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ভিনসেন্ট আবুবাকারের চিপে সার্বিয়ান গোলরক্ষক পরাস্ত হলেও অপফসাইডে প্রাথমিকভাবে বাতিল হয় সেই গোল। তবে ভিএআরে দেখা যায়, গোলটি অফসাইড হয়নি। নাটকীয়তা শেষে গোলটি পায় বৈধতা।
আর সার্বিয়ার মতোই গোলের ছন্দকে কাজে লাগিয়ে খেলায় সমতা ফেরায় এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিং। ভিনসেন্ট আবুবাকারের বাড়ানো বলকে গোলপোস্টে ঢুকিয়ে ক্যামেরুনের বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখেন এই বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার।
দুই গোলের লিড কাজে লাগাতে না পেরে ম্যাচ শেষে সার্বিয়ান খেলোয়াড়দের কিছুটা হতাশই মনে হয়। অন্যদিকে, দারুণভাবে ফিরে এসে নিজেদের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে পেরে খানিকটা হলেও খুশি ক্যামেরুন। রাউন্ড অব সিক্সটিনে যেতে হলে শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে হারাতে হবে আফ্রিকান অদম্য সিংহদের। ভিনসেন্ট আবুবাকার-এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিংদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগের তাই কঠিন পরীক্ষায় সামনে। নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে কোনো ম্যাচে প্রথমবারের মতো ৩ গোল করা ক্যামেরুন ভাবতে পারে, নতুন কিছু করতেই তো বিশ্বমঞ্চে আসা!
/এম ই
Leave a reply