৯/১১ এর চেয়েও ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি ছিল লাদেনের, ফাঁস করলেন ছেলে

|

ওমর বিন লাদেন। ছবি: সংগৃহীত।

অবশেষে গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে নিজের শৈশবের স্মৃতি তুলে ধরেছেন কুখ্যাত আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ছেলে ওমর বিন লাদেন (৪১)। বাবা ওসামা বিন লাদেনের সাথে কাটানো সময় ও তার কিছু গোপন পরিকল্পনা ফাঁস করেছেন লাদেন পুত্র। তিনি জানান, আল-কায়দার উত্তরসূরি হিসেবে তাকেই বেছে নিয়েছিলেন লাদেন। তাই বাবার কারণেই ছোটবেলাটা কেটেছে দুর্বিষহভাবে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে ওমর বিন লাদেনের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। দ্য সানে এ সংক্রান্ত একটি সাক্ষাৎকার দেন ওমর। সেখানে তিনি বলেন, আমাকেই উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বাবা। তাই ছোটবেলা থেকেই আমাকে নানা ধরনের অস্ত্রচালনা শিখতে হয়েছে। ছোট বেলাতেই একে৪৭ চালানোর জন্য আমাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। রাশিয়ান ট্র্যাংক চালানোও শেখানো হতো।

ওমর জানান, ৯/১১ এ টুইন টাওয়ারে হামলার চেয়েও ভয়াবহ কিছু ঘটাতে চেয়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন। তিনি জানান, হামলার জন্য রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন লাদেন। এ নিয়ে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রের পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হতো। আর এসব অস্ত্র পরীক্ষার জন্য নমুনা হেসেবে বেছে নেয়া হতো ওমরেরই প্রিয় পোষ্যদের।

ওমর বলেন, বাবা রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা চালাতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি আমি জানতে পারি, কারণ সেই রাসায়নিক অস্ত্রের পরীক্ষা করা হয় আমারই প্রিয় কুকুরের ওপর। আমার চোখের সামনে কুকুরটি ছটফট করতে করতে মারা যায়।

ওমরের দাবি, ছোট থেকেই এই জগত ভালো লাগতো না তার। চারপাশে হওয়া নৃশংসতা দেখতে দেখতে তার শিশুমন একেবারে বিষিয়ে উঠেছিল। তাই বড় হওয়ার পর লাদেনের কাছে গিয়ে তিনি সরাসরি এই জগত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। ওমর বলেন, বাবা কখনোই আমাকে আল-কায়দায় যোগ দেয়ার জন্য জোর করেননি। তবে তিনি বলতেন, আমিই তার সেই ছেলে, যে আল কায়দাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তাই যখন আমি তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চাইছিলাম, তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে বাধা দেননি।

ওমর জানান, বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসার পর আর যোগাযোগ হয়নি। ৯/১১ এর হামলার খবর পেলাম, যা আমাকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এরপর তার মৃত্যুর খবর পাই গণমাধ্যমে। বাবাকে আমি ছেড়ে আসলেও তার নাম আমার নামের সাথে এখনো জুড়ে আছে। এর দরুণ এখনও মানুষ আমার দিকে আড় চোখে তাকায়। এখনও আমি অবসাদের জন্য ওষুধ খাই। ছোটবেলার সেই ভয়াবহ স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণভাবে এখনও বের হয়ে আসতে পারিনি।

যে হাতে শিশুকালে অস্ত্র ও ভয়ঙ্কর ট্যাংক চালিয়েছেন ওমর, এখন সেই হাতেই তুলে নিয়েছেন তুলি। তার সুনিপূণ আঁচড়ে ফুটে ওঠে পাহাড়-নদী ও প্রাচীন কোনো ইতিহাস। শিল্পী হিসেবে বেশ নাম কামিয়েছেন ওমর। তার আঁকা ছবি ৮৫০০ পাউন্ড পর্যন্তও বিক্রি হয়।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply