ভিএআর বা ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির ভূমিকা দিন দিন আরও বিতর্ক সৃষ্টি করছে। মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসিকে অনুকূলে পেনাল্টি দেয়া, হ্যারি ম্যাগুয়ারের বিপক্ষে পেনাল্টি না দেয়া, বেশ কিছু গোল অফসাইডে বাতিল হওয়ার ঘটনায় অনেক বিতর্ক দেখেছে কাতার বিশ্বকাপ। তবে এসবের কোনোটিই পারেনি স্পেনের বিপক্ষে জাপানের দ্বিতীয় গোলের মতো বিতর্ক সৃষ্টি করতে। এবার ইএসপিএন তাদের ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, ফিফার অনুসৃত নিয়ম অনুসারে কেন গোলটি বৈধতা পেলো।
বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিদায় নিয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। জাপানের কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার জন্য অনেক হিসেবের প্রয়োজন ছিল জার্মানির সামনে। কিন্তু নিজেদের সমীকরণে এগিয়ে গেলেও জাপানের কাছে স্পেনের হারে বিদায় নিতে হয়েছে জার্মানিকে।
তবে সবার মনেই প্রশ্ন উঠেছে, স্পেনের বিরুদ্ধে ৪৮ মিনিটে জাপানের দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে; যা মূলত প্রধান ভূমিকা পালন করেছে জার্মানির বিদায়ে। টিভি ক্যামেরা দেখে মনে হয়েছে, বলটা গোললাইন পার করে চলে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভিএআর সিদ্ধান্ত দিয়েছে গোলের পক্ষে। এটা নিয়েই যতো বিতর্কের শুরু।
৪৮ মিনিটের সময় জাপানের রিতসু দোয়ান ক্রস করেছিলেন স্পেন বক্সে। বল সবাইকে ফাঁকি দিয়ে লাইনের বাইরে চলেই যাচ্ছিল প্রায়। কিন্তু কাইসো মিতোমা সেটা আবার ক্রস করেন বক্সে। আর কানাতা হাঁটু দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। রেফারি প্রথমে গোল না হওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। কিন্তু ভিএআর পরে সিদ্ধান্তটা বদলে দেয়।
ফিফার আইন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়মে বল যদি জালের বাইরের লাইন সম্পূর্ণ পার করতো তখনই কেবল সেটা বাতিল হতো অর্থাৎ, গোল হিসেবে গণ্য হতো না। এই ক্ষেত্রে বল লাইনের ওপর দিয়ে চলে গেছে মনে হলেও খেয়াল রাখতে হবে ফুটবল জিনিসটা গোল, আয়তাকার নয়।
সাইড ক্যামেরা দেখে বল লাইনের বাইরে চলে গেছে মনে হলেও টপ অ্যাঙ্গেল থেকে দেখলে বলের সূক্ষ্ম অংশ লাইনের ভেতরে থাকলে সেটা গোল হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, বল বাতাসে নাকি মাটিতে সেটি বিবেচ্য নয়।
গোল লাইন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত ক্যামেরায় টপ অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা গেছে, বলের একটি ছোট্ট অংশ লাইনের উপর অবস্থান করছিল। তাই গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন রেফারি।
এই গোলেই তুলে নেয়া জয়ে ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় উঠেছে জাপান। স্পেনের বিপক্ষে জাপান ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র করলে জাপানের পয়েন্ট হতো ৪। তখন জাপানের গোল ব্যবধান হতো ০। আর কোস্টারিকার বিপক্ষে ৪-২ গোলের জয় তুলে নেয়া জার্মানির ‘ই’ গ্রুপে বর্তমান অবস্থান তৃতীয়। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট ও +১ গোল ব্যবধান দলটির।
অর্থাৎ জাপান ও স্পেনের মধ্যকার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হলে তখন জার্মানি ও জাপানের পয়েন্ট হতো সমান ৪। কিন্তু গোল ব্যবধানে এগিয়ে (+১) থাকায় গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠত জার্মানিই।
/এনএএস
Leave a reply