স্টাফ রিপোর্টার,মানিকগঞ্জঃ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈরে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে এক দিনমজুরকে ফাঁসাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে দুই পুলিশ। এসময় ব্ক্ষিুব্ধ জনতা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে শারীরিক নির্যাতন করতে গেলে এক ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে কোনো রকমে রক্ষা পান তারা।
এঘটনায় এলাকাবাসীরা পুলিশের ওই দুই সদস্যদের দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে থানার ওসি ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে।
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) সন্ধায় সিঙ্গাইর থানার এস আই মানিক ও কনস্টেবল জাহিদ একটি মোটর সাইকেল নিয়ে বলধরা ইউনিয়নের ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় যান। ওই বাজারের কহিনুর ইসলামের কসমেটিকের দোকানের সামনে থেকে সাদা শার্ট ও লুঙ্গি পড়া দিনমজুর হাসেম আলীকে ধরে তার পকেটে দুটি ইয়াবা ঢুকিয়ে দেন তারা। এরপর হাশেম আলীকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে থানায় নিয়ে যাবার সময় উপস্থিত এলাকাবাসী তাৎক্ষনিক এর প্রতিবাদ করে এবং এক পর্যায়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ঘেরাও করে।
উত্তেজিত জনতা তাদেরকে মারধর করতে উদ্যত হলে স্থানীয় বলধরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন তাদের রক্ষা করেন।
খবর পেয়ে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে দুই ঘণ্টা আলোচনার পর তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে মুক্ত করে থানায় নিয়ে যান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ফরহাদ পুলিশের সাথে যোগসাজশে নিরীহ লোকদের মাদকের মামলায় আটক করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন। আর এই টাকার ভাগ ফরহাদের পকেটে যায়।
ভুক্তভোগী হাসেম আলী জানান, তিনি সন্ধ্যায় বাজারে থেকে ঔষধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে বন্ধুদের সাথে গল্প করছিলেন। এ সময় সাদা পোশাকে দুই লোক এসে তার লুঙ্গি ও শার্ট ধরে টানাটানি করে। এরপর তারা পকেটে জোড় করে কি যেন ঢুকিয়ে দিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে দেয়। এরপর তারা দাবি করে আমার পকেটে দু’টি ইয়াবা পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে থাকা এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা দুই পুলিশ সদস্যকে পাকড়াও করে।
এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ঈমাম হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে হাশেম আলীকে আটক করে। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাশেম আলী একজন ভাল ছেলে। পড়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তথ্যদাতা পুলিশকে হাশেম আলীর সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ইয়াবা দিয়ে দিনমজুর হাশেম আলীকে ফাঁসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামিম বলেন, ইয়াবা সেবন বা ব্যব্সার সাথে আটক ব্যক্তি জড়িত না থাকায় ঘটনাস্থল থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে । এমন ঘটনার সাথে পুলিশ বা সোর্স যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যমুনা অনলাইন: আরএম/বিএম
Leave a reply