বিজয়ের ৫১ বছরে ঢাকাই সিনেমা; প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির পার্থক্য কতোটা?

|

ফাইল ছবি

মুখ ও মুখোশ কিংবা ওরা ১১ জন! দামাল অথবা পরাণ, হাওয়া! শুধু কী এ সিনেমাগুলোর মাঝেই লুকায়িত ঢাকাই সিনেমার যাত্রা। বিশ্বমানচিত্রে বিজয়ের ৫১ বছরে কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সিনেমা? গল্প বলার স্বাধীনতা কতোটুকু? সিনেমার বিজয় আসলে কোনখানে?

যেনো কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি আজ গল্পের স্বাধীনতা।  শুধু যে ‘শনিবার বিকেল’ই আটকে আছে এমনটা বললে ভুল হবে। সিনেমায় গল্প বলার পরিপূর্ণ স্বাধীনতা কি এসেছে আজও? এই করলে সেন্সরে আটক, ওই করলে মুক্তিতে বাঁধা! কোথায় তবে গল্পের স্বাধীনতা?

অথচ, এ দেশ তো স্বাধীন হয়েছে সেই কবে? দেশ স্বাধীনের পর যদিও বঙ্গবন্ধু বিএফডিসি গড়েছেন নিজ হাতে। তবুও বিজয়ের ৫১ বছরে বিএফডিসি ভঙ্গুর, মৃত প্রায়! এমন কী চেয়েছিলো কেউ? তবুও আশা আছে, স্বপ্ন আছে বাংলা সিনেমা নিয়ে। বাংলাদেশের সিনেমা আজ বিশ্বমানচিত্রে বিজয়ের ৫১ বছরে। গল্প নির্ভর সিনেমায় দিন ফিরছে সিনেমার। এই বা কম কিসে?

আমাদের সিনেমার অর্জন নিয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সাইমন সাদিক বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র কানে যাচ্ছে আরও বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে। আমাদের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রশংসিত হচ্ছেন আন্তর্জাতিক মহলে। এটা নিঃসন্দেহে একটা ইতিবাচক।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার বলেন, আমাদেরকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এ পর্যন্ত আসতে হয়েছে। এ যাত্রাটা একেবারে খারাপ না।

আলোর বিপরীতে যেমন থাকে অন্ধকার; তেমনি সিনেমার অর্জনের সাথে রয়েছে পিছিয়ে থাকা! এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু বলেন, ৫১ বছরেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্রের জন্য যে পরিমাণ কলাকুশলী আমাদের পাওয়ার কথা ছিল তা আমরা পাইনি। এটা আমাদের একটা বড় ব্যর্থতার জায়গা। আবার আমরা যে একেবারেই কিছু পাইনি তা না। তবে, মাত্র কয়েকটি সাফল্য দিয়ে আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করাটা একদমই ঠিক হবে না।

এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র পরিচালক রায়হান রাফি বলেন, আমরা অনেক সাবজেক্ট নিয়ে কাজ করতে পারি না। অনেক ধরনের বিধিনিষেধ থাকে। পুলিশের অনেক ভাল ভাল ও গৌরবজনক কাজ আছে কিন্তু সেগুলো নিয়েও আমরা সিনেমা বানাতে পারি না।

অনেকের মতে বিজয়ের ৫১ বছরেও স্বাধীনতাহীন বাংলাদেশের সিনেমা।  এখনো উপনিবেশবাদ সিনেমায়! কিন্তু কীভাবে?

চলচ্চিত্র সমালোচক বেলায়াত হোসেন মামুন এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্রিটিশরা কিছু আইন তৈরি করে গিয়েছিলো আবার পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা কিছু আইন তৈরি করে গিয়েছিলেন সে সকল আইন আজও বাংলাদেশে বলবৎ বা কার্যকর আছে। এবং সেই সাথে গত ৫১ বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকার চলচ্চিত্র সংস্কৃতির কণ্ঠরোধ করবার জন্য যে সকল কালাকানুন তৈরি করেছিলেন সে সকল কালা কানুন এখনও বলবৎ আছে।

তবে কি আশার  আলোর নেই? অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে বাংলাদেশের সিনেমা?

চলচ্চিত্র সমালোচক বেলায়াত হোসেন মামুন বলেন, বিজয়ের ৫২তম বছরেও যেনো আজকের মতো দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে না হয় যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতি আসলে বন্দিত্বের মধ্যে রয়েছে। আমি এই বন্দিত্ব নিরসনের জন্য সবার কাছে অনুরোধ জানাতে চাই।

এখনকার সিনেমার নতুন জোয়ার আশা জাগায় সোনালি দিনের, বিশ্বমানচিত্রে উঁচু অবস্থানের। সেন্সরশিপের বেড়াজাল কিংবা রাষ্ট্রীয় খোলসের বাইরে একদিন জন্ম নিবে স্বাধীন এক সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি! সে আশায় বুক বাঁধতে ক্ষতি কী?

বিস্তারিত দেখতে ক্লিক করুন এখানে- বিজয়ের ৫১ বছরে ঢাকাই সিনেমা; প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসেব মিলছে কী?

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply