পুনরায় ফাইনাল চায় ফরাসি সমর্থকরা; রেফারির প্রতিক্রিয়া এবং আরও ইস্যু

|

ছবি: সংগৃহীত

আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সেই ম্যাচ নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা হয়নি, এই অভিযোগ জানিয়ে পুনরায় ফাইনাল আয়োজনের পিটিশনে অংশ নিয়েছেন দুই লাখের বেশি ফুটবল সমর্থক; যার মধ্যে ফ্রান্সের সমর্থকই বেশি। আর এমন দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন ফাইনাল ম্যাচের রেফারি সাইমন মার্চিনিয়াক। সেই সাথে, ফাইনালের ক্লিপিং থেকে দেখা গেছে, এমবাপ্পের তৃতীয় গোল হয়েছিল যে হ্যান্ডবলের কারণে, তার তিন সেকেন্ড আগে ফ্রান্সের ডিফেন্ডার উপামেকানোর হাতেই বল লেগেছিল। বিতর্কের বিষয় তাই একটি নয়। খবর গোল ডটকম, মিরর, ডেইলি মেইলসহ ইউরোপের একাধিক গণমাধ্যমের।

পুরো বিশ্বকাপেই রেফারিং নিয়ে অভিযোগ ছিল দলগুলোর। যার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ফাইনালেও। সেই ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। রুদ্ধশ্বাস এই লড়াইয়ে রেফারির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফ্রান্স সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। ম্যাচের ২৩ মিনিটে রেফারির আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দেয়া, এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হলে তা অগ্রাহ্য করা, ডেম্বেলের ট্যাকেলে ডি মারিয়ার পড়ে যাওয়া, ভিএআরের সাহায্য না নেতার মতো কিছু সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত ফরাসিরা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ফাইনাল ম্যাচটিই পুনরায় আয়োজনের দাবি তুলেছে অনলাইনে পিটিশনের প্ল্যাটফর্ম ‘মেসওপিনিয়নস’। এই পিটিশনে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সই করেছে ২ লাখের বেশি মানুষ।

লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির দ্বিতীয় গোলে অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচে ৩-২ ব্যবধানে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। ফরাসি সমর্থকদের দাবি, মেসির এই গোলটি বাতিল করতে হবে। কারণ ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মেসি যখন গোলটি করলেন সেই মুহূর্তে আর্জেন্টিনার সাইডলাইনে দাঁড়ানো দুইজন খেলোয়াড় দাঁড়িয়ে ছিলেন মাঠের ভেতর।

তবে প্রতিক্রিয়ায় এমন দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রেফারি সাইমন মার্চিনিয়াক। তিনি বর্তমানে আছেন নিজ দেশ পোল্যান্ডে। সেখানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্চিনিয়াককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মেসির গোলটি বৈধ কিনা। এর জবাবে নিজ পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে একটি ছবি দেখান তিনি। বলেন, ফরাসিরা এই ছবির ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, এমবাপ্পের তৃতীয় গোলের সময় ফ্রান্সের সাইডবেঞ্চের সাতজন খেলোয়াড় প্রবেশ করেছিল মাঠে। এখন দেখতে হবে, ফিফার নিত্মে কী আছে। গোলের সময় মাঠে বাইরের কেউ ঢুকে পড়লেই গোল বাতিল হবে না। দেখতে হবে, সাইডবেঞ্চের কারও মাঠে প্রবেশ করার মাধ্যমে খেলা বা গোল করায় কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা। এবার দেখুন, দুইটি গোলের সময়ই যারা লাফিয়ে দাগ অতিক্রম করে মাঠে ঢুকে পড়েছিল, তাতে খেলায় কি কোনো প্রভাব পড়েছিল?

ফরাসি গণমাধ্যমে লেকিপের সমালোচনা প্রসঙ্গে সাইমন মার্চিনিয়াক আরও বলেন, ফ্রান্সের রেফারিরা আমাকে বন্ধু বলে সম্বোধন করেছে। দারুণ অভ্যর্থনাও পেয়েছি। রেফারি ও খেলোয়াড়রা আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কিলিয়ান এমবাপ্পেও ধন্যবাদ জানিয়েছে আমাকে। খেলোয়াড়রা কী বলে, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তার উপর, ফরাসিরা আমাকে ম্যাচের পর ধন্যবাদ জানিয়েছে। জানিয়েছে, রেফারিং নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।

তবে, গোলের সময় মাঠে সাইডবেঞ্চের খেলোয়াড় ঢুকে পড়াই একমাত্র বিষয় নয়। ভিএআরের সহায়তা নেয়া হলে বাতিল হতে পারতো এমবাপ্পের তৃতীয় গোলটি, যার মাধ্যমে ম্যাচে সমতা এনে ফাইনালকে টাইব্রেকারে নিয়ে যায় ফ্রান্স। এমবাপ্পের শট ডি বক্সে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার মন্তিয়েলের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ফাইনাল ম্যাচের ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, কিংসলে কোম্যানের কর্নার থেকে আসা বল ফরাসি ডিফেন্ডার উপামেকানোর হাতে লেগে যায় এমবাপ্পের কাছে। আর তখনই এমবাপ্পের নেয়া শট লেগে যায় মন্তিয়েলের হাতে। উপামেকানোর হ্যান্ডবল রেফারির চোখ এড়িয়ে গেলেও এড়ায়নি মন্তিয়েলের হ্যান্ডবল। ভিএআরের সহায়তা নিলে এমবাপ্পের গোলও হয় না, ম্যাচও যায় না টাইব্রেকারে। উল্টো, এমবাপ্পের জায়গায় বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুটই জিতে জেতেন আসরের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি।

আরও পড়ুন: ‘লিওনেলের স্যুটকেস’ শুনে কাঁদলেন মেসি ও আন্তোনেল্লা

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply