ক্রিসমাসে নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে আমেরিকানরা

|

বিবিসি থেকে সংগৃহীত ছবি।

বিমানের ফ্লাইট বাতিল আর ফ্লাইট ডিলের বিভীষিকা না কাটতেই, নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন মার্কিনীরা। খুঁজে পাচ্ছেন না ব্যাগ-স্যুটকেস। বৈরি আবহাওয়ায় এয়ারপোর্ট চালু না থাকায়, জমে গেছে হাজার-হাজার লাগেজ। সেই মহাসমুদ্রেই অন্ধের মতো নিজের লাগেজ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণকারীরা। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের আশ্বাস দেয়া হলেও, বাস্তব চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের আরলিংটন এয়ারপোর্ট যেনো লাগেজের মহাসমুদ্র। তার মাঝে, কাঙ্ক্ষিত ব্যাগ বা স্যুটকেস খুঁজে পাওয়াটাই যেনো সৌভাগ্য। শুধু, এটিই নয়; যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বিমানবন্দরেই এখন দেখা যাবে এমন দৃশ্য।

টেক্সাসনিবাসী বিল জেমের যাওয়ার কথা ছিলো ওয়াশিংটনে। কিন্তু চার এয়ারপোর্ট আর দুটি এয়ারলাইন্সে চড়ার পরও পৌঁছাতে পারেননি গন্তব্যে। উল্টো পড়েছেন নতুন বিপত্তিতে; খোয়া গেছে সাথে থাকা লাগেজ। শুধু তিনিই নন, অপেক্ষায় থাকা প্রায় প্রত্যেক যাত্রীই পড়েছেন এ ভোগান্তিতে। বেশিরভাগের আফসোস, প্রিয়জনের জন্য কেনা ক্রিসমাস উপহার হারিয়ে গেলে পাবেন ভীষণ দুঃখ।

বিল বলেন, রোববার (২৫ ডিসেম্বর) টেক্সাস থেকে শুরু হয়েছে আমার যাত্রা, এখনও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি। ক্রিসমাসের মধ্যরাতে আমার ফ্লাইট বাতিল হয়। দুটি এয়ারপোর্ট ঘুরেও পাইনি বিকল্প বিমানের টিকিট। তাই ভাবলাম, এয়ারপোর্ট বসে রাত কাটানোর বদলে হোটেলে থাকাটাই ভালো। এখন, লাগেজের স্তুপের মধ্যে নিজের স্যুটকেস খুঁজছি। একটা জগাখিচুড়ি সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। মাথায় রাখতে হবে- এটা ক্রিসমাস। এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করতে চাচ্ছি না। বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাদেরও হাত-পা বাধা। কিন্তু, ছোট ভাইটার জন্য বেশকিছু উপহার কিনেছিলাম। সেগুলোই হারালো।

জানা গেছে, এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ সাধ্যমতো পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টা করছেন। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন- সময়মতো মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হবে নিজ-নিজ লাগেজ। কিন্তু, তাতে খুব একটা ভরসা রাখতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

লাগেজ হারানো আরেক ভূক্তভোগী বলেন, আমার লাগেজ হারিয়ে গেছে। এখানে সবার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ব্যাগ-স্যুটকেস খুঁজছে; না পেলে যেতেও পারছে না। গতকালও ব্যাগ খুঁজতে এসেছিলাম। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ২-৩ দিনের মধ্যে তারা জানাবেন। কিন্তু, এয়ারপোর্টে দীর্ঘসময় থাকার জন্যেও শীতের কাপড় দরকার।

দুটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে আমার। এরপর ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করলাম, ট্রেনেরও সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বাসও যাত্রীতে পরিপূর্ণ। সবশেষ, একটি গাড়ি ভাড়া করলাম। সেটাও এয়ারপোর্ট পর্যন্ত আসতে ৫-৬ ঘণ্টা। এর মাঝে, পাচ্ছি না লাগেজ। মনে হয় না- আগামী কয়েক সপ্তাহেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

এদিকে, তুষারপাত কমলেও এখনও চালু করা যায়নি অনেক রানওয়ে। মঙ্গলবারও পাঁচ হাজার ফ্লাইট বাতিল করেছে মার্কিন এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ। দেরিতে যাত্রা শুরু করে প্রায় সাড়ে চার হাজার বিমান। সবমিলিয়ে, গেলো শুক্রবার থেকে ১২ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply