রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই এবার সামরিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে বলকান অঞ্চলে। কয়েকদিন ধরে চলা টানাপোড়েনের মধ্যে সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছে কসোভো ও সার্বিয়া। কসোভোর সার্ব অধ্যুষিত এলাকায় অভিযানের জন্য নিজ বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে, বেলগ্রেডের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ এনেছে কসোভো। খবর বিবিসির।
গত দুদিন ধরেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে কসোভো-সার্বিয়ার রুদের সীমান্ত। সেখানে টহল চলছে সামরিক বাহিনীর। সতর্ক উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এর ঠিক দুদিন আগেই নিজদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিচ। তার অভিযোগ, সহিংসতা সৃষ্টি করতে চাইছে কসোভো।
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিচ বলেন, যারা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছেন তাদের মনে রাখা উচিত যে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। একটি পক্ষ কসোভোর সার্বদের মাঝে সহিংসতা ছড়ানো চেষ্টা করছেন। এ অপচেষ্টা আমরা কোনোভাবেই সফল হতে দেবো না।
বলকানে এমন উত্তেজনার শুরু গত নভেম্বর থেকে। মিত্রোভিকাসহ কসোভোর উত্তরাঞ্চলের এলাকায়গুলোয় বসবাস কসোভান সার্বদের। কসোভোর ভূখণ্ডে থাকলেও স্থানীয় এ সার্বরা গাড়ির নিবন্ধনসহ প্রশাসনিক প্রায় সব কাজই করেন সার্বিয়ার অধীনে। নভেম্বরে এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় কসোভো প্রশাসন। বন্ধ করে দেয় সার্বিয়ায় নিবন্ধিত সব গাড়ি। প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন সার্ব বংশোদ্ভুত বিচারপতি, আইনপ্রণেতা,পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রায় ৬শ দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এ ঘটনায় ক্ষোভ ছড়ায় কসোভোর সার্ব অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোয়।
কসোভোর প্রধানমন্ত্রী অ্যালবিন কুর্তি এ প্রসঙ্গে বলেন, এদেশে সবারই সমান অধিকার আছে। আমাদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নেই। কিন্তু, সার্বিয়া এখানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইছে। বেলগ্রেডের লক্ষ্য আমাদেরকে আমারও আবারও ৩০ বছর পিছিয়ে নেয়া। এ কারণেই তারা সীমান্তে ব্যারিকেড দিচ্ছে। তবে এভাবে আমাদের আটকে রাখা সম্ভব নয়। সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি শান্ত না হলে তা রুশ-ইউক্রেনের মতো যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে।
এ প্রসঙ্গে সার্বিয়ার রাজনীতি বিশ্লেষক মিওডরাগ মিলিসেভিচ বলেন, সবচেয়ে বড় আশঙ্কার বিষয় হলো উভয়পক্ষই আগ্রাসী আচরণ করছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। সীমান্তের দুপাশেই অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত তারা। বেলগ্রেড-প্রিস্টিনার এ উগ্র আচরণ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর উচিত এখনই উভয়পক্ষের সাথে আলোচনায় বসা।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমাদের সমর্থন নিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত কসোভো ২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তবে, এখনও তার স্বীকৃতি দেয়নি সার্বিয়া।
/এসএইচ
Leave a reply