কেঁদো না বাবা, দেখো একদিন ওই বিশ্বকাপটা ঠিকই এনে দেব আমি। মাত্র ১০ বছর বয়সী পেলে এভাবেই বাবাকে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন শিরোপা আনার। সেই কথা তিনি রেখেছেন। একটি নয়, সেলেসাওদের তিন তিনটি শিরোপা এনে দেন ফুটবলের এই সম্রাট।
ব্রাজিলের সাও পাওলোর এক বস্তিতে জন্ম- ফুটবলের এই সম্রাটের। অভাব অনটন মেটানোর জন্য ছেলেবেলাতেই পেলেকে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়। এর সাথে রেলস্টেশনে ঝাড়ু দেবার পাশাপাশি কিছুদিন জুতা পরিষ্কার করার কাজও করেছিলেন তিনি। টবল কেনার টাকা ছিল না বিধায় মোজার ভেতরে কাগজ ঠেসে বানানো ফুটবলে চালাতেন অনুশীলন। তার জাদুকরি ছন্দে মুগ্ধ হয়ে তাকে ব্রাজিলের জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে অভিষেক পেলের। এরপর প্রায় দুই দশক ধরে তিনি মাঠ মাতিয়েছেন আপন রঙে, আপন ছন্দে। ক্লাব ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় কেটেছে ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সান্তোসে। এই ক্লাবের হয়েই নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন ছয়শত’র বেশি গোল। এরপর মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জয় করেন পেলে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে হ্যাটট্রিক আর ফাইনালে জোড়া গোল করে উচিয়ে ধরেছিলেন শিরোপা।
পেলেকে দেখার জন্য নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছিল।
সেই পেলের আজ প্রস্থান। কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। মানুষ বাঁচে তার কর্মে, তার অর্জনে, তার প্রাপ্তিতে। পেলে নেই, তবু আছেন কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়ে, তিনি থাকবেন ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায়ে।
জীবনের শেষটা পেলে কাটিয়েছেন পরিবারের সদস্যবেষ্টিত হয়েই। মরণব্যাধি ক্যান্সারে হুইলচেয়ার আর হাসপাতালের বিছানাতেই কেটেছে তার বাকি জীবন।
/আরআইএম
Leave a reply