ফিলিস্তিনের পক্ষে যুগান্তকারী প্রস্তাব পাস জাতিসংঘে

|

ফিলিস্তিনের পক্ষে যুগান্তকারী প্রস্তাব পাস হলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের আইনি পরিণতি সম্পর্কে মতামত দেবেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজে। ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ৮৭ দেশ দিয়েছে এর সমর্থন। একে সাধুবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি। তিনি বলেন, শান্তি এবং ন্যূনতম আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান থাকলে, নিপীড়িত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ান। খবর আল জাজিরার।

ইসরায়েলের শাসনে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে আবারও ফিরেছে কট্টর ডানপন্থী সরকার। উদ্বেগের বিষয় হলো, তাদের মূল প্রতিশ্রুতি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পুরোপুরি দখলে নেয়া। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালাতেও দ্বিধা করবে না এমন ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।

এমন দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিসংঘের তরফ থেকে সুবাতাস এলো। পবিত্র নগরী জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের আইনি পরিণতি সম্পর্কে মতামত দেবেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, এমন প্রস্তাবনা পাস হলো সাধারণ পরিষদে।

এ নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের আইনি পরিণতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতামত দেয়ার প্রস্তাবনা পাস হয়েছে সাধারণ পরিষদে। ভোটাভুটিতে ৮৭ জন সমর্থন দিয়েছেন। বিপক্ষে ছিলেন ২৬ জন, অনুপস্থিত ৫৩ সদস্য।

প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। একইসাথে, মানবিকতার খাতিরে নিপীড়িত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় বিশ্ববাসীকে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ঔপনিবেশিক শাসন এবং জাতিবিদ্বেষ জোরালো করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েলি কট্টর ডানপন্থী সরকার। এরপরই জাতিসংঘে পাস হলো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব। আপনারা যদি শান্তি এবং আইনের প্রতি ন্যূনতম বিশ্বাস রাখেন, তাহলে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতামতকে সমর্থন করবেন। স্বাধীনতা-ন্যায়বিচার এবং শান্তি বহাল রাখতে চাইলে, ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

এদিকে, মুসলিম এবং আরব বিশ্ব ঢালাওভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানালেও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমের ভোটে ছিল বিভাজন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটিশ কূটনীতিক থমাস ফিপস বলেন, পশ্চিমতীরের অস্থিরতা নিয়ে ব্রিটেন উদ্বিগ্ন। সবপক্ষকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের তাগিদও দেয়া হচ্ছে। তবুও আমরা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছি। কারণ, ব্রিটেন বিশ্বাস করে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতামতে রাতারাতি পাল্টে যাবে না ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন। এর জন্য প্রয়োজন দু’পক্ষের মুখোমুখি বৈঠক।

সবশেষ ২০০৪ সালে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের ব্যাপারে রায় দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। সে সময় বলা হয়, দখলকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম ঘিরে যে দেয়াল তোলা হয়েছে, সেটি অবৈধ। সে সময় একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় হিসেবে আখ্যা দেয় ইসরায়েল।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply