নতুন বছরে অর্থনীতি: ‘মূল্যস্ফীতির চাপ কমার সম্ভাবনা নেই’

|

রিমন রহমান:

অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভে চাপ, বৈদেশিক বাণিজ্যে অস্থিরতা আর বিনিয়োগে টান— সব মিলিয়ে বলা যায় অর্থনীতিতে স্থবিরতার বছর ছিল ২০২২ সাল। শুরু হয়েছে নতুন বছর, ২০২৩। কেমন হবে অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি? বলা হচ্ছে, এ বছরও সুখকর বা অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের তেমন আভাস নেই।

ফেলে আসা বছরটিতে অর্থনীতিতে চরম অস্বস্তি দেখেছে বিশ্ব। বৈশ্বিক টানাপড়েনে টালমাটাল অবস্থায় বাংলাদেশও। করোনা এবং পরবর্তীতে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থমকে দিয়েছে সামষ্ট্রিক অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি। পাগলা ঘোড়ার মতো ছুঁটছে মূল্যস্ফীতি। দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে স্বল্প আয়ের মানুষ। প্রশ্ন হচ্ছে নতুন বছরে কি কোনো সুখবর মিলবে?

অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা বলতে পারি, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে অনিশ্চিয়তা সম্ভবত ২০২৩ সালেও এটি চলমান থাকবে। আমন ধান উঠেছে, এরপরও চালের দামে আমরা স্থিতিশীলতা পাচ্ছি না। এর মানে চালের বাজার সঠিকভাবে কাজ করছে না। খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

এদেক, ব্যাংক খাত নিয়ে গেলো বছর জুড়েই ছিল আলোচনা। রেকর্ড খেলাপি ঋণ, ঢালাও ছাড়, ঋণ দেয়ায় অনিয়মসহ নানা কারণে দুর্বল অবস্থায় ব্যাংকের স্বাস্থ্য।

মুস্তফা কে মুজেরি বললেন, যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, তাদের সুবিধা দিতো। ঢালাওভাবে সবাইকে সুবিধা দিয়ে ঋণ খেলাপিদের উৎসাহিত করা হলো।

নির্বাচনের বছরে তৈরী হয় নানা অনিশ্চয়তা। বিনিয়োগে হাত গুটিয়ে নেয় ব্যবসায়ীরা, কমে যায় উৎপাদন। পরামর্শ এসেছে, অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড বাদ দিতে হবে।

মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগকে গতিশীল করা প্রয়োজন। নির্বাচন দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া। এটা এভাবে চলতে থাকলে অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।

নতুন বছরে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে স্বস্তি দেখছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। জানালেন, সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতি হবে।

এম এ মান্নান বলেন, ২০২৩ সাল গত বছরের চেয়ে ভালো হবে। আমনের ভালো ফল হয়েছে। মজুদও ভালো ছিল, প্রায় ২০ লাখ টন। আমদানিও খুলে দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বেশি পণ্য আনছে না। তারা জানে বাজারভর্তি পণ্য। তারা জানে, আমদানি করলে বেশি লাভ হবে না। খাদ্য ঘাটতির সমস্যা বড় কিছু হবে না আমাদের।

নির্বাচনের বছর বেড়ে যায় টাকা পাচার, এমন যুক্তির ক্ষেত্রেও এম এ মান্নান ভিন্ন ব্যাখ্যা দাঁড় করালেন। টাকা পাচার নিয়মিত হচ্ছে। নির্বাচনের বছরে এটি কমবে। যারা অর্থ পাচারে জড়িত, তাদের কিছু খরচ স্থানীয়ভাবে করতে হয়।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply