কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক চলছে প্রযুক্তি খাতে। তালিকায় আছে মাইক্রোসফট, টুইটার, মেটার মতো শীর্ষ কোম্পানিগুলো। আর, এতে সবশেষ সংযোজন বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন। গেলো বছর দেড় লাখের কর্মী মানুষ চাকরি হারিয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রযুক্তি জায়ান্টদের এমন পদক্ষেপে প্রশ্ন উঠছে কোম্পানিগুলোর নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা নিয়ে। খবর রয়টার্সের।
গত বছরের নভেম্বরেই বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন। তবে অনুমিতের চেয়ে সে সংখ্যাটি আরও বড়। জানা গেছে অ্যামাজন বিদায় জানাটে যাচ্ছে তার ১৮ হাজার কর্মীকে। করোনা মহামারির সময়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম চাকরিদাতা এ প্রতিষ্ঠানটি। নতুন নতুন প্রকল্পে হয় বিনিয়োগ, যা পরিচালনায় লোকবল বাড়ানো হয় কয়েক শতাংশ।
জানা গেছে, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বজুড়ে চলমান অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে অ্যামাজনসহ গোটা প্রযুক্তি খাতে। খরচ বাঁচানোর দ্রুততম তরিকা হিসেবে কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। তবে দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠানের মুনাফার ওপর এর প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও তৈরি করে আস্থাহীনতা।
বিশ্লেষক জেফ টমাসুলো এ প্রসঙ্গে বলেন, অর্থ বাঁচাতেই তৎক্ষনাৎ কর্মীদের ছাঁটাই করে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর ফলও পাওয়া যায় দ্রুত। এর ফলে কিন্তু অনেক প্রকল্প বন্ধও করতে হয়। দ্বিধায় ভোগেন বিনিয়োগকারীরাও। আর এর প্রভাব পড়ে রাজস্বেও।
টুইটারের সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই গৎ বছর বিশাল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেন ইলন মাস্ক। আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয় ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা। চাকরি হারিয়েছে, মাইক্রোসফট, স্ন্যাপ, অ্যালফাবেটের মতো কোম্পানি থেকেও হয়েছে শ্রমিক ছাঁটাই। মন্দার সময় চাকরি হারানোয় অস্থির অবস্থা বৈশ্বিক কর্মসংস্থান বাজারেও। সমালোচকরা বলছেন, নিয়োগকারীরা বৈশ্বিক বাজারের গতিপ্রকৃতি বুঝতে না পারার কারণেই তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি।
বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাপক প্রবৃদ্ধির সময় বিপুল জনবল নিয়োগ। আবার মন্দার সময় ঝুঁকি নিতে না চাওয়া। দূরদর্শীতার অভাব ইত্যাদি এক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক। দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করলে, কিন্তু ব্যবসার ভবিষ্যতের স্বার্থে সাময়িক ঝুঁকি নিতেই হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালেও প্রযুক্তি খাতে ছাটাইয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
/এসএইচ
Leave a reply