মাত্র এক বছরে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ১৬৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দেশটির জাতীয় সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলীয় অধিদফতর প্রকাশ করেছে এ বিষয়ক প্রতিবেদন। এদিকে, ১৭২ বছরের মধ্যে ২০২২ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছর দেখলো ইউরোপ। ইইউ গবেষকদের পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। খবর বিজনেস ওয়ার্ল্ডের।
২০১৬’র পর সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ বছর হিসেবে ২০২২ সাল পার করলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির শীর্ষ আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একবছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি ডলারের লোকসান গুনেছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলীয় জাতীয় অধিদফতরে কর্মরত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অ্যাডাম স্মিথ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষি-পর্যটন-জলজ সম্পদের। যার, সরাসরি প্রভাব পড়ে বাণিজ্যেও। আমাদের জীবনযাত্রা ভালোভাবে পরিচালনার জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। গত বছর, ১৮টি মারাত্মক দুর্যোগ দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব দুর্যোগে, ১০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি রেকর্ড করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অদূর ভবিষ্যতে সবচেয়ে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত আমেরিকার মানুষই পড়বেন চরম দুর্ভোগে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্টের সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলীয় জাতীয় অধিদফতরের পরিচালক ড. রিক স্পাইনার্ড বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং চরম আবহাওয়ার কারণে ঝুঁকিতে পড়ছেন অতীতের তুলনায় বেশি সংখ্যক মার্কিনী। শুধু উপকূলই নয়, হারিকেন-দাবানল-খরা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লোকালয়ও। প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব পড়ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর খেলার জায়গাতেও। এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে বিশ্ব।
একইদিন খরা-দাবদাহ নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ইইউ’র গবেষকরা। তারা জানান, ১৮৫০ সালে সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছর দেখেছিলো ইউরোপ। এরপরই তালিকায় আসে ২০২২ সাল।
এ প্রসঙ্গে কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেইঞ্জ সার্ভিসের মুখ্য গবেষক ফ্রেজা ভামবর্গ বলেন, গেলো ৮ বছর ধরে উষ্ণ থেকে উষ্ণতম বছর দেখছে গোটা বিশ্ব। সে ধারাবাহিকতায় ২০২২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছর। আর, ইউরোপের জন্য ছিলো দ্বিতীয়। দেশগুলোয় গ্রীষ্মকালে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এখন স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরা হচ্ছে। তবুও, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই।
প্রসঙ্গত, গত গ্রীষ্মে দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ইউরোপের দেশগুলোয়। ফ্রান্স-জার্মানি-ইতালি-স্পেন-ব্রিটেনে তীব্র গরম এবং সংশ্লিষ্ট রোগে মৃত্যুবরণ করেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
/এসএইচ
Leave a reply