সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ :
পরকীয়া সম্পর্কের জেরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ দণ্ডাদেশ প্রধান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, উল্লাপাড়ার এনায়েতপুর গুচ্ছগ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. নুর ইসলাম (৪৩) ও একই গ্রামের মো. হানিফ আলীর ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৪৩)। মামলার পরিচালনাকারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (পিপি) আব্দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধূ উল্লাপাড়ার ঘাটিনা মধ্যপাড়া গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের মেয়ে সেতু খাতুনের (২০) সাথে এনায়েতপুর গ্রামের মো. রেজাউলের সঙ্গে বিয়ে হয়। এরপর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ঘটনার দুই মাস পূর্বে সেতু খাতুনের সঙ্গে উপজেলার বেতকান্দি গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী মো. শিপন কারীর সাথে ২য় বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই আসামি নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলামের সাথে সেতু খাতুনের পরকীয়া ও অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে গত ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আসামি নুর ইসলামকে সিএনজি নিয়ে তার স্বামীর বাড়িতে আসতে বলে সেতু খাতুন। নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম মধ্যরাতে সেতু খাতুনের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে সেতু খাতুনকে নিয়ে উল্লাপাড়ার ঘাটিনা ব্রিজের পশ্চিম পাশে যান। সেখানে শফিকুল ও নুর ইসলাম তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে চাইলে সেতু খাতুন তাদেরকে বলেন, তাদের একজনকে তাকে বিয়ে করতে হবে। বিয়ে না করলে সেতু খাতুন তাদের বাড়িতে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার হুমকি দেয়। এতে নুর ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম তাদের অবৈধ কর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে সেতু খাতুনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেতু খাতুনকে ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে ধইঞ্চাক্ষেতে নিয়ে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আজ আসামি মো. নুর ইসলাম ও মো. শফিকুল ইসলামের উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পরে তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
ইউএইচ/
Leave a reply