আহমেদ রেজা:
ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ, দূষণ রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় একসাথে কাজ করবে আন্তঃসীমানা বেষ্টিত নদী তীরের তরুণরা। আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ প্রত্যয়ের কথা জানান তারা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের জন্য সঠিক পানি ব্যবস্থাপনার ওপরও গুরুত্ব দেন তরুণদের প্রতিনিধিরা।
বন্যা কিংবা ভাঙনের করাল গ্রাসের নিরব সাক্ষী ৭০ বছরের হাসিনা বেগম। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মানিকোনা গ্রামের এই বাসিন্দা দেখেছেন কুশিয়ারার ভাঙা-গড়া; যার সাথে মিশে আছে ঘর, ভিটে-মাটি, স্বপ্ন। তিনি জানান, অর্ধেক ভিটে চলে গেছে নদীর গর্ভে। বৃষ্টি শুরু হলেই মাটি গড়িয়ে যায় নদীতে। হাসিনার গল্পের সাক্ষী অনেকে। জীবন-জীবিকার জন্য নদী নির্ভর এই এলাকাবাসীরা শুধু নিজেদের খুঁজেছেন হারানোর মাঝে।
বাংলাদেশের আন্তঃসীমানা নদী ৫৭টি। প্রতিবেশী ভারতের সাথে ৫৪ আর বাকি ৩টি মিয়ানমারের সাথে। জলতত্ত্ব বা রাজনৈতিক; যেকোনো দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ এসব নদী। তীরবর্তী জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার মাধ্যমও নদী। আন্তঃসীমা নদীগুলো নিয়ে তৈরি হয় নানা জটিলতা। এতে বন্যা, ভাঙন ও খড়ার মতো দুর্যোগে ভোগান্তি বাড়ে স্থানীয়দের। স্থানীয়রা জানান, নদীতে পানি কমে গেছে। এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। আয়ের এই নির্ভরযোগ্য উৎস সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে ভারতীয় ও বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা জানান, এই দুই দেশে অবস্থিত আন্তঃসীমা নদীর পরিমাণ অনেক। এই বিপুল পরিমাণ পানির বণ্টন ইতিবাচকভাবে করা উচিত, যাতে করে দুই দেশই উপকৃত হতে পারে। আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে তরুণ প্রতিনিধিরা জানালেন, পানি বণ্টনে আন্তর্জাতিক আইন ও কৌশলগত সহায়ক হবেন তারা। তাদের মত হচ্ছে, ভৌগোলিকভাবে দু’জায়গা দিয়েই যখন নদী বইছে, তখন নদী দুই দেশেরই। দুই দেশকেই নেতৃত্ব দিয়ে নদী বাঁচাতে হবে।
নদীর মানচিত্রে জিপিএস ব্যবহার করে এর ডাটাবেস স্থাপনে কাজ করার আগ্রহ তরুণদের। নেপালের প্রতিনিধি জানান, নদী বাঁচানোর উদ্দেশ্য কেবল এই প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে করলে চলবে না; ভবিষ্যৎ প্রজন্মও যেন এ থেকে উপকৃত হতে পারে, সে জন্য নদী বাঁচানোর ধারণা এবং সদিচ্ছা রাখতে হবে।
/এম ই
Leave a reply