আসরের দুই রাউন্ড বাকি থাকতেই প্রথম দল হিসেবে এবারের বিপিএল থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো খুলনা টাইগার্সের। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিনের প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের ৫ উইকেটে ১৯৪ রানের জবাবে ৮ উইকেটে ১৫৭ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। আর, ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফরমেন্সের সুবাদে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান।
মিরপুরে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই চার-ছয়ে শুরু করেন বরিশালের ওপেনার আনামুল হক বিজয়। তবে মাত্র ১২ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। উইকেট হারালেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং থামেনি বরিশালের ব্যাটারদের। প্রথমবার ওপেন করতে নামা ফজলে মাহমুদ রাব্বি ২৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে করেন ৩৮ রান।
তিন নম্বরে নামা ইব্রাহিম জাদরান অবশ্য ভালো করতে পারেনি আজ। ২৩ বলে ২৩ রান করেন এ আফগান ব্যাটার। ইব্রাহিম মন্থরগতিতে খেললেও চারে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন সাকিব আল হাসান। ২১ বলে ১টি চার ও ৪টি ছয়ে তিনি খেলেন ৩৬ রানের দুর্দান্ত এক ঝড়ো ইনিংস। কেবল সাকিব নয়, পাঁচে নেমে ঝড় তোলেন ইফতিখারও। ৩১ বলে ৩টি করে চার ও ছয়ে ৫১ রান নিয়ে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন এ পাকিস্তানি ব্যাটার।
শেষ দিকে নেমে করিম জানাত ৮ বলে ৩ চারে যোগ করেন আরও ১৬ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। খুলনা টাইগার্সের পক্ষে পল ফন মিকেরেন ৪৮ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া হাসান মুরাদ এবং নাহিদুল ইসলাম ১টি করে উইকেট নেন।
১৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যর্থ তামিম ইকবাল। দলের সামনে যখন জয়ের কোনো বিকল্পই নেই তখন মাত্র ১ রান করে আউট হন এ বাঁ-হাতি ওপেনার। তবে ২য় উইকেটে অ্যান্ডি বালবির্নিকে সাথে নিয়ে অধিনায়ক সাই হোপ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন।
দলীয় ৪৭ রানে বালবির্নি আর ৪৮ রানে মাহমুদুল জয় আউট হলে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় খুলনা। আর, ৫৪ রানে সাই হোপ ৩৭ রান করে আউট হলে শেষ হয়ে যায় তাদের জয়ের শেষ সম্ভাবনাটুকুও।
৫ম উইকেট জুটিতে নাহিদুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ৮১ রানের জুটি গড়েন ইয়াসির আলী রাব্বী। শেষ ৩ ওভারে ৬০ রানের দরকার ছিলো খুলনার। তখন বরিশালের ত্রাতা হয়ে আসেন কারিম জান্নাত। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে নাহিদুলকে লং অফে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে তালুবন্দী করেন এ আফগান বোলার। ২৪ বলে ২৪ রান করে আউট হন নাহিদ।
একই ওভারের ৪র্থ বলে আবারও আঘাত হানেন কারিম। হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বিপদজনক হয়ে ওঠা ইয়াসির রাব্বীকে নিজের ২য় শিকারে পরিণত করেন তিনি। নাহিদের মতো লং অফ দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেছিলেন রাব্বীও। কিন্তু, মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ধরা পড়ে তিনিও ফেরেন সাজঘরে।
এরপর আর কোনো চেষ্টা করার সুযোগ ছিলো না খুলনার সামনে। সে সুবিধা কাজে লাগিয়েই শেষ ওভারে আরও দুই উইকেট তুলে নেন কারিম জান্নাত। ওভারের প্রথম বলে নাসুমকে বোল্ড করার পর ৫ম বলে মিকেরেনকে আউট করে নিজের ৪র্থ উইকেট তুলে নেন। এরপর শেষ বলে হাসান মুরাদকে এলবিডব্লিউয়ের শিকার বানিয়ে নিজের ৫ম উইকেটি প্রায় তুলেই নিয়েছিলেন কারিম জান্নাত। কিন্তু শেষ বলে রিভিউ নিয়ে তা আর হতে দেয়নি খুলনা। এডিআরএস’এ বাতিল করা হয় তার শেষ উইকেটটি।
এ জয়ের ফলে টেবিলের ২য় স্থান ধরে রাখলো ফরচুন বরিশাল। আর দুই ম্যাচ বাকি থাকতে আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো খুলনা টাইগার্সের।
/এ এইচ
Leave a reply