কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম-৩ শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) অধ্যাপক ডা. আক্কাছ আলী ২ হাজার ৭০৩ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারি ভাবে জয়লাভ করেছেন। এ নির্বাচনে তিনি ৮২হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক এম.এ মতিন পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৯৫ ভোট। রিটার্ণিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নির্বাচনে জাল ভোটের অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরা হলেন উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বাগুয়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে ইমরুল কায়েস (২৮), মরহুম নেরকান মন্ডলের ছেলে আক্কাছ আলী (৩৮) ও মোন্নাফ আলীর ছেলে শাহাজাহান (৩০)।
নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উলিপুর উপজেলার কাজিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচপি কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্ট মিঠু চন্দ্র বুধবার ভোর ৬টায় মোটর সাইকেলযোগে আসার সময় উলিপুর শহরে ট্রাক্টরের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
কুড়িগ্রাম-৩ আসন উলিপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন এবং চিলমারী উপজেলার ৪টিসহ মোট ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৭৭ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৮ জন। ভোট কেন্দ্র ১৫৯টি।
উলিপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে ১৩০টি ভোট কেন্দ্রে জাপা প্রার্থী পান ৭২ হাজার ৬২৮ ভোট এবং নৌকা প্রার্থী পান ৬১ হাজার ৪৬৮ ভোট। অপরদিকে চিলমারী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২৯টি ভোট কেন্দ্রে জাপা প্রার্থী পান ৯ হাজার ৯৭০ ভোট এবং নৌকা মার্কার প্রার্থী পান ১৮ হাজার ৪২৭ ভোট।
এদিকে ভোটের ফলাফলের আগেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে উলিপুর শহরে বিজয়ী মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা বের করতে দেখা যায়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নৌকা মার্কা প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন মর্মে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এই শূন্য আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ছিল টানটান উত্তেজনা। শহর জুড়ে মহড়া আর মিছিলে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও ফলাফলে জয়ী হয়েছে জাপা প্রার্থী। ভোটের আগের রাতে উলিপুরের থেতরাই, বজরা, গুনাইগাছ, তবকপুর, পৌরসভা ও ধামশ্রেণিতে এবং চিলমারীর ৪টি ইউনিয়নে জাপার ভোটার ও এজেন্টদের কেন্দ্রে না আসার জন্য আওয়ামী লীগের সমর্থকরা হুমকি দেয় বলে জাপা প্রার্থী আক্কাছ আলী অভিযোগ করেন। বুধবার দিনভর এসব কেন্দ্রে নিরবতাও লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি ভোট কাস্টিংও হয়েছে কম।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এ কে এম মাইদুল ইসলামের মৃত্যুর কারণে কুড়িগ্রাম-৩ আসনটি শূন্য হয়। এই আসনে গত ১০ জুন নির্বাচন কমিশন উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৪ জুলাই প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
Leave a reply