তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প: জীবন বাঁচাতে লড়তে হচ্ছে ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরাদেরও

|

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পের পর ৩ দিন পার হয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে আতঙ্ক আর হতাশা। কাউকে কোনো রকমে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেই আরও শক্তি পাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে বহু এলাকায় এখনও পৌঁছায়নি সাহায্য, যেতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভূমিকম্পে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। সেই সাথে চলছে তীব্র তুষারঝড় আর বৃষ্টি। ফলে কঠিন হয়ে উঠেছে উদ্ধারকাজ। এতে চোখের সামনে স্বজনদের জীবিত থাকার সম্ভবানা যতই কমছে, ততই ক্ষোভ আর হতাশা বাড়ছে ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরাদের মাঝে। তবে ভূমিকম্পে সব হারিয়ে তাদের জীবন নিয়েই এখন টানাটানি অবস্থা। বৈরী আবহাওয়ায় মাথার ওপর ছাদ নেই, খাবার নেই। শোক আর আতঙ্ক মাথায় নিয়ে একটু উষ্ণ থাকতে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে শুধু ছুটে চলেছেন তারা। খবর বিবিসির।

টানা দু’দিন ধরে ধ্বংসস্তূপের সামনে অপেক্ষা করছেন আলেপ্পোর এই তরুণ। বাবা-মা চাপা পড়েছেন ধ্বংসস্তূপের নিচে। ভূমিকম্পের পর দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনও এখানে উদ্ধারকারী দল পৌঁছায়নি। অসহায় এ তরুণ বলেন, আমার পরিবারের সবাই এই ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন। জানি না তাদের কবে বের করা হবে। এখনও এখানে এসে পৌঁছাতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। যারা আছে, তাদের কাজের গতিও খুব ধীর।

এতো গেলো, ভবনের ভেতর আটকে পড়াদের অসহায়তা। তবে ভাগ্যের জোরে যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদেরও প্রাণ ওষ্ঠাগত। এতেকো স্বজন হারানোর শোক, এর ওপর এই বৈরি আবহাওয়ায় মাথা গোজার ঠাঁইও নেই। ভুক্তভোগী এক তরুণ বলেন, কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে তো থাকা যায়। কিন্তু এই কঠিন আবহাওয়ায় মাথার ওপর যদি ছাদও না থাকে, তাহলে কোথায় যাবো? এরচেয়ে ভয়ংকর আর কিছুই হয় না মানুষের জীবনে।

কেউ আবার সরকারের ওপরই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। বলছেন, প্রশাসন-সরকার সবাই ব্যর্থ হয়েছে। তা না হলে ৩ দিন পার হওয়ার পরও কেনো আমাদের সামান্য মাথা গোজার ঠাঁই হবে না?

এদিকে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও দেখা দিয়েছে স্থান সংকুলানের অভাব। এনিয়েও হতাশা গৃহহীনদের কণ্ঠে। বলছেন, যেসব ঘরে ৩-৪ জন করে থাকা যায়, সেসব ঘরে থাকতে হচ্ছে ৫-৬ জনকে। পাশে গাড়িতেও অনেকে রাত কাটিয়েছেন। জানি না এসব থেকে মুক্তি পাবো কবে।

এ অবস্থায় অপর্যাপ্ত ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজে ধীরগতির কথা স্বীকার করেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষও। তবে দ্রুতই সবকিছু সমন্বয়ের আশ্বাস তাদের।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply