শওকত মঞ্জুর শান্ত:
নতুন কবি বা লেখক তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবেই পরিচিত বইমেলার লিটল ম্যাগ চত্বর। সময়ের সাথে অমর একুশে গ্রন্থমেলার পরিসর বেড়েছে, একই সাথে বেড়েছে লিটল ম্যাগ চত্বরের পরিসরও। কিন্তু, আগের মতো আর ভিড় জমে না সেখানে। লেখক, কবি আর প্রকাশকদের অভিযোগের শেষ নেই।
এবারের অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের জায়গা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সর্ব বামে। টিএসসি থেকে বইমেলা প্রবেশের পরই হাতের বামে সারি সারি ছোট ছোট স্টল করে জায়গা দেয়া হয়েছে লিটল ম্যাগকে। কিন্তু, দিন থেকে রাত গড়ালেও পাঠকের আনাগোনা নেই সেখানে। যে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে একটা সময় নিরব বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন লেখক, কবি, প্রকাশকরা, লেখনীর নেশায় বুদ হয়ে জলাঞ্জলী দিয়েছেন নিজের ক্যারিয়ার। তারাই এখন এক বুক হতাশার কথা বলছেন। প্রমত্তা নদী যেন শুকিয়ে গেছে।
মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, মেলার এই সাইডটায় লোকজন আসতে চাচ্ছে না। কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। শুধুমাত্র স্টল বরাদ্দ দেয়া ছাড়া বাংলা একাডেমিরও যেন আর কোনো দায়িত্ব নেই। সারা বছর কোনো সম্পর্কও রাখে না।
‘কবি-লেখক সৃষ্টির আঁতুড়ঘর’ নামেই পরিচিতি লিটল ম্যাগাজিনের। বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিকই উঠে এসেছেন লিটল ম্যাগাজিনের লেখার মাধ্যমে। কিন্তু, এখন এ ধারা অনেকটাই অনুপস্থিত। তবে কি সময়ের সাথে তাল মিলাতে পারছে না লিটল ম্যাগাজিন?
লিটল ম্যাগাজিনের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ থেকে ৫-১০ বছর আগেও যেভাবে মানুষ আসতো এখানে; তা কমে গেছে। চারপাশের রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতার কারণেই লিটল ম্যাগ তার স্বরে কথা বলতে পারছে না।
প্রথা ভাঙ্গার শক্তি জাগানিয়া লিটল ম্যাগাজিন নতুন কবি, সাহিত্যিকদের জন্য ছিল অসীম সাহসের আধার। যে লেখা অন্য কোথাও প্রকাশের সুযোগ হতো না, লিটল ম্যাগাজিনে তা অবলীলায় প্রকাশিত হতো।
এত সব নেই এর মাঝেও আশায় বুক বাধেন সংশ্লিষ্টরা। সুদিন ফিরবে লিটল ম্যাগাজিনের। আবারও সাহিত্যের এক প্রবল খরস্রোতা নদী হয়েই লেখনীর ঢল নামাবে লিটল ম্যাগাজিন, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
/এসএইচ
Leave a reply