হিট আউট হলে ২০ লাখ, স্ট্যাম্পিং হলে ৫ লাখ; লতাকে সোহেলীর প্রস্তাব

|

বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ নারী দলের ক্রিকেটার লতা মণ্ডলকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার।

বিশ্বকাপ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত নারী জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দলের বাইরে থাকা আরেক ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার। যমুনা টিভির কাছে ম্যাচ পাতানোয় মধ্যস্থতার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। ‘আকাশ’ নামের এক জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানান সোহেলী। বলেন, তিনি কেবল মধ্যস্থতা করেছেন। কোনো ভুল করেননি বলেও দাবি তার।

প্রস্তাব পাওয়া ক্রিকেটার হলে বাংলাদেশ নারী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য লতা মণ্ডল। তিনি এ বিষয়টি আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) জানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন।

লতা মণ্ডলের সাথে সোহেলী আক্তারের কথোপকথনের ক্লিপ যমুনা টেলিভিশনের হাতে এসেছে। সংশ্লিষ্টদের মাধম্যে সেগুলো ভ্যারিফাই করা হয়েছে। যমুনার পাঠকদের জন্য এ কথোপকথন তুলে ধরা হলো-

সোহেলী আক্তার: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি তোমার ক্ষতি কখনই করবো না। তোমার যখন ইচ্ছা তুমি খেলবা, যখন ইচ্ছা হবে না খেলবা না। তোমার মন চাইলে তুমি একটা খেলবা। কোন ম্যাচটা খেলবা তোমার ইচ্ছা, তুমি যে ম্যাচ অফার করো, তোমার সুবিধামতো। ধরো একটা ম্যাচ তুমি ভালো খেললা, পরের ম্যাচে তুমি খেলতে পারো। স্ট্যাম্পিং, হিট আউট হতে পারো। তোমার যদি মনে হয় ২০-৩০ লাখ অফারে তুমি হিট আউট হবা না, স্ট্যাম্পিং হইয়ো। তাহলে ধরো ৫ লাখ, তুমি যদি মনে করো কম হয়ে যাচ্ছে তাহলে সেটাও বলতে পারো। তাহলে আমি আমার ভাইকে বলবো। একথা শুধু তোমার আর আমার মাঝেই থাকবে।

তুমি কিন্তু ভেবো না যে এ জিনিস প্রথম তুমিই ইয়ে করবা। আমাদের মধ্যে এখানে আছে (আরও ৫ জন ক্রিকেটারের নাম বলেন। তদন্তের স্বার্থে সেগুলো প্রকাশ করা হলো না।) এরা এগুলার মধ্যে আছো, বুঝছো?

লতা মণ্ডল: বান্ধবী আমি এগুলোর মধ্যে নাই। তুমি আমাকে এগুলো বইলো না। এগুলো আমাকে দিয়ে কখনও হবে না। আমাকে এসব বইলো না, প্লিজ।

সোহেলী আক্তার: বান্ধবী, আমি তোমাকে যেটা বলতেছি এটা তোমার আর আমার মধ্যে থাকবে। তুমি তো আমাকে বিশ্বাস করো হান্ড্রেড পারসেন্ট যে আমি কাউকে বলতেও যাবো না। আর যেহেতু তোমার আমার আমার ব্যাপার। আমার চাচতো ভাই ও ফোনে বেট খেলে। ওখানে তোমাদের যে ওয়ার্ল্ড কাপ চলতেছে সেটা নিয়ে ভালো ভালো মনে হয় অফার দিছে। সে আমাকে গতকাল ফোন দিয়ে অনেকক্ষণ কথা বলছে। বলছে, আপু লতা আপুর সাথে তো আপনার ভালো সম্পর্ক, ফেসবুকে ছবিটবি দেন দেখি। আপনি একটু লতা আপুর সাথে কথা বলে দেখবেন উনি যদি ৫ নাম্বারে (৩ ডাউন) নেমে হিট আউট হতে পারবেন কিনা। পেস বলে তো হিট আউট হওয়া সহজ। খেলা তো এরপর অস্ট্রেলিয়ার সাথে, ভালো ভালো দলের সাথে। সেটা ওনার ইচ্ছা উনি কোন ম্যাচে খেলবে। উনি যেদিন বলবে সেদিন আমরা ধরবো। পেস বলের সময় ধরো ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে তোমার পায়ে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে গেলো। বা স্পিনে সুইপ খেলতে গিয়ে, ফলো থ্রু শেষ হওয়ার সময় ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে গেলো। তাহলে আমি তাকে ২০ লাখ টাকা দেবো। যদি ওনার কম মনে হয়ে যায় তাহলে আরও ৫ লাখ টাকা দেবো।


সোহেলী আক্তার: আমি তাকে বলেছি দেখ এগুলা তো অনেক রিস্কি। একটা প্লেয়ারের ইয়েটিয়ে নিয়ে টানাটানি। যদি জানাজানি হয়ে যায় তাহলে অনেক সমস্যা। ও বলছে আপু উনি তো আপনার সাথে কথা বলবে। আপনি তো আর কাউকে বলতে যাচ্ছেন না। আমার তো প্লেয়ারদের সাথে জানাশোনা নাই। উনি যদি আমার জন্য খেলে আমি কেনো কাউকে বলতে যাবো। তুমি খেলতে চাইলে খেলবা না খেললে নাই। এটা তুমি আর আমি জানবো, আর কেউ জানবে না। আরেকটা কথা হচ্ছে, উনি যদি মনে করেন হিট আউট হওয়াটা ওনার জন্য কষ্ট হয়ে যায় তাহলে উনি চাইলে স্ট্যাম্পিং হতে পারে। উনি কোন আউট হবে এটা আমাকে আগে বলতে হবে। তাহলে আমি ওনাকে ৫ লাখ টাকা দেবো। আপু যদি চায় আগেও টাকা নিয়ে নিতে পারে। অথবা আপু যদি মনে করে আপুর এমন কেউ আছে, আপু আমি আপনার বাসায় আসলাম। আপু যখন আউট হবে সাথে সাথে টাকা নিয়ে চলে যাবে। কোনো সমস্যা নাই। আর আমি তো আপনার ভাই, ঠিক না? এখানে দুই নম্বরি করার কিছু নেই। আর উনি যদি আমার জন্য খেলে দেয় আমি কেনো দুই নম্বরি করবো? উনি তো আমার ভালোর জন্যই করছে। আমি ওকে অনেক কথা বলছি।

তুমি খেলো আর না খেলো আমাকে বলতে বলছে আমি মাধ্যম হয়ে বললাম তোমাকে। তুমি খেললে খেললা, না খেললে নাই। তুমি শুধু ইয়েস অর নো বইলো। আর তুমি ভয়েস মেসেজ শুনে ডিলিট করে দিও। আমিও ডিলিট করে দিবো।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply