এবার একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন রংপুরের বদরগঞ্জের ভাষাসংগ্রামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মাস্টার। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ভাষা ও রাষ্ট্র সংগ্রামের বিভিন্ন ইতিহাসের সাক্ষী তিনি। ৯৫ বছর বয়সেও দিন, ক্ষণ, তারিখ ও নাম উল্লেখ করে সেই ইতিহাস বলতে পারেন এ ভাষা সৈনিক।
রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মজিবুর রহমান মাস্টার। লড়াকু ব্যক্তিত্বের অধিকারী মজিবুর রহমান মাস্টার বদরগঞ্জ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় ১৯৪৮ সালে ঢাকায় এসে যোগ দিয়েছিলেন ভাষা সংগ্রামে। গ্রামে ফিরে ভাষার জন্য সংগঠিত করেছিলেন স্থানীয় ছাত্র-জনতাকে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বদরগঞ্জ ডাকবাংলো মাঠে বিক্ষোভের সময় বারিসাত নামের একজন ভাষা সৈনিককে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে মুজিবরের নেতৃত্বে হয়েছিল থানা ঘেরাও।
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ মজিবর রহমান মাস্টার স্মৃতিচারণ করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান যদিও জেলে ছিলেন তবে তিনি আগেই বলেছিলেন যে, তোমরা প্রতিবাদ করবে। কায়েদে আজম ইংরেজিতে বললেন উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। তখন সবাই ‘নো নো’ বলে প্রতিবাদ করে ওঠে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মাস্টার বলেন, অনেক জায়গায় আমরা গিয়ে ভোট চেয়েছি এই বলে যে, বাংলাভাষার জন্য আমরা ভোট চাই।
পীরগাছা কাউনিয়া আসনে সে সময় শেরেবাংলা একেএম ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের জন্য ভোট প্রার্থনা করেছিলেন মজিবর মাস্টার।
বঙ্গবন্ধুর দেয়া হাসকিং মিলের মালিক হওয়ায় মেজর ডালিমের দিলকুশার অফিসে যাতায়াত ছিল মুজিবর মাষ্টারের। এই সময়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হওয়ার গন্ধ পেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি জানাতে পঁচাত্তরের ১৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরেও গিয়েছিলেন তিনি।
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষা সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ মজিবর রহমান মাস্টার বলেন, ষড়যন্ত্র টের পেয়ে হারাগাছের এমপি আউয়াল সাহেবের নেতৃত্বে ১৯জন এমপিসহ গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছে গণভবনে।
একুশে পদক পাওয়ায় তার বাড়িতে ছুটে যান রংপুরের ডিসি, বদরগঞ্জের ইউএনও, আপামর জনসাধারণ আনন্দে উজ্জীবিত তারা।
রংপুর ডিসি ডক্টর চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমরা সত্যিই আপ্লুত।
/এসএইচ
Leave a reply