এশিয়া কাপে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সোহেলী

|

গত বছর অক্টোবরে দেশে অনুষ্ঠিত নারী এশিয়া কাপে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সোহেলী আক্তার। বাংলাদেশ নারী দলের এই ক্রিকেটারকে ইচ্ছাকৃত ওয়াইড বল করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়টি বিসিবি কিংবা আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) জানাননি তিনি।

সম্প্রতি জাতীয় নারী দলের সদস্য লতা মণ্ডলকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন সোহেলী। সে বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তাহমিদ অমিতের কাছে নিজেই ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানান তিনি। অন্তত এশিয়া কাপ থেকে এই চক্রের সাথে সম্পৃক্ততার কথা উঠে আসে সোহেলীর বক্তব্যে।

আলাপচারিতায় সোহেলী জানান, আকাশ নামের এক ব্যক্তি তাকে ম্যাচ ফিক্সিং করতে বলেছিলেন। সেই ব্যক্তির সাথে ফেসবুকে পরিচয় বলে দাবি তার। দু’জনের সম্পর্ককে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন সোহেলী। তবে অপর ক্রিকেটার লতা মণ্ডলকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেয়ার সময় এই ব্যক্তিকে ‘ভাই’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সোহেলীর দাবি আকাশকে চ্যালেঞ্জ দেয়ার জন্য লতাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। যদিও লতার সাথে তার কথোপকথন বলছে ভিন্ন কথা। একাধিক সূত্রে জুয়াড়ি চক্রের সাথে সোহেলীর জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পেয়েছে যমুনা টেলিভিশন। আকসুর রাডারে থাকায় এখন গণমাধ্যমে আর কথা বলছেন না তিনি। আগামী রোববার ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আকসু প্রতিনিধি ডেকে পাঠিয়েছেন সোহেলীকে। সাথে আইনজীবীও নিয়ে যেতে পারবেন তিনি।

পড়তে পারেন: হিট আউট হলে ২০ লাখ, স্ট্যাম্পিং হলে ৫ লাখ; লতাকে সোহেলীর প্রস্তাব

তাহমিদ অমিতের সাথে ক্রিকেটার সোহেলী আক্তারের আলাপচারিতার চুম্বক অংশ ছিল এ রকম—

সোহেলী আক্তার: আমি যখন বোলিং করি, তখন একটা ওয়াইড দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। আমি বলছি, দরকার নাই।

তাহমিদ অমিত: বিনিময়ে আপনাকে টাকা দিতো, তাই-তো?

সোহেলী আক্তার: হ্যাঁ। উনি এ রকম বলেছিল, কোনো খেলোয়াড়ের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারবো কিনা। আমি বলি, পারবো না এসব। দেখেন, এগুলো অনেক খারাপ জিনিস। এসবের মধ্যে আমাকে জড়াইয়েন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার সাথে কথা হয়। এখন যে সম্পর্ক আছে সেটাই ভালো।

তাহমিদ অমিত: তার মানে উনি আপনার পরিচিত?

সোহেলী আক্তার: পরিচিত বলতে ফেসবুকে কথা হতো।

তাহমিদ অমিত: উনি কী বাংলাদেশের?

সোহেলী আক্তার: হ্যাঁ, বাংলাদেশের।

তাহমিদ অমিত: এটি কি এশিয়া কাপের ঘটনা?

সোহেলী আক্তার: হ্যাঁ। এটি কোনো ম্যাচের নয়, যখন এশিয়া কাপ চলছিল, তখন উনি আমাকে বলতেছিলেন, আপনি চাইলে এ রকম করতে পারেন। আমি বলেছি দেখেন, আমি এগুলোর মধ্যে জড়াবো না, প্লিজ।

তাহমিদ অমিত: এ ধরনের প্রস্তাব পেলে তো আপনাদের আকসুকে জানাতে হয়…

সোহেলী আক্তার: উনি আমার সাথে আলোচনা করেছে, বলেন নাই যে এটা করতেই হবে। আর আমি একেবারেই ইগনোর করে দিছি।

প্রসঙ্গত, সতীর্থকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনায় রয়েছেন সোহেলী আক্তার। বিশ্বকাপ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত নারী জাতীয় দলের ক্রিকেটার লতা মণ্ডলকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার। যা উঠে আসে যমুনা নিউজের অনুসন্ধানে। সোহেলী আক্তার নিজেই প্রস্তাব দেয়ার কথা স্বীকার করেন যমুনা নিউজের কাছে। জানান, আকাশ নামের পরিচিত ব্যক্তির সাথে চ্যালেঞ্জ করে প্রস্তাব দেন তিনি। অথচ তিনি নিজেই এর আগে একই ব্যক্তির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন। লতা মণ্ডলকে দেয়া প্রস্তাবে হিট আউট হলে ২০ লাখ এবং স্ট্যাম্পিং হলে ৫ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলেন সোহেলী। তিনি শুধু মধ্যস্থতা করছেন বলেও লতা মণ্ডলকে জানিয়েছিলেন সোহেলী। লতাকে পুরো আলাপটি ‘ডিলিট’ করে দিতে বলেন সোহেলী।

আরও পড়ুন: ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি আকসুকে জানিয়েছেন লতা মণ্ডল

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply