রিমন রহমান:
খাতা-কলমে প্রতি মাসেই একটু একটু করে কমছে মূল্যস্ফীতির হার। কিন্তু তাতেও অর্থনীতির এই সূচকে স্বস্তিতে নেই ভোক্তারা। সরকারি হিসাবে মূল্যস্ফীতির হার এখন সাড়ে ৮ ভাগের বেশি। কয়েক মাস ধরেই পণ্যের দামে এমন অস্থির অবস্থা চলছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলছে না ক্রেতাদের। এখন রমজানকে সামনে রেখে পণ্যের দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন সাধারণ ভোক্তারা।
সরকারি হিসেব বলছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এই পাঁচ মাসে দেড় শতাংশের মতো কমেছে মূল্যস্ফীতির হার। তারপরও সাড়ে ৮ শতাংশের ওপরে এখন মূল্যস্ফীতি। অর্থাৎ প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতা।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সামনে এসেছে ডলার সংকট। ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে জ্বালানির দুষ্প্রাপ্যতা এবং মূল্যবৃদ্ধিও উস্কে দিচ্ছে দাম। এ নিয়ে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বললেন, মাল খালাস হচ্ছে না, ডলার পাওয়া যাচ্ছে না, সরবরাহ ঠিকমতো নেই অন্যদিকে চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে। এমন নানামুখী সমস্যার কারণে পণ্যের দাম এখন বেশি।
তবে বিশ্ব বাজারে কমছে পণ্যের দাম। শুধু পাশ্ববর্তী দেশই নয়, উন্নত বিশ্বেও এখন কমতির দিকে মূল্যস্ফীতি। তবে দেশে এর তেমন কেনো প্রভাব নেই। তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, কোনো দ্রব্যের ওপর সরকার কর আরোপ করার পর তার কত দাম হচ্ছে সেটি সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিশ্লেষণ করা উচিত। একই সাথে মূল্যস্ফীতির বিষয়টিও নিয়মিত মনিটরিং করা দরকার।
দেখা যাচ্ছে, শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শহরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮.৩৯ শতাংশ, অন্যদিকে গ্রামে এ হার ছিল ৮.৬৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গত বছরের তুলনায় মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আয়ের তুলনায় এটি এখনও সহনীয় পর্যায়ে আছে। তাই প্রতিবেশী অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি।
এদিকে, আসন্ন রমজান মাস নিয়ে মানুষের চিন্তা বাড়ছে আরও। রোজার মাস এলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় অতিমুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী। ভোক্তারা বলছেন, এসব সমস্যা সমাধানে বাজার তদারকির ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
এসজেড/
Leave a reply