কক্সবাজার প্রতিনিধি
রোহিঙ্গা না হওয়ার কারণে কুতুপালংয়ে বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান এমএসএফ’র হাসাপাতালে মুমূর্ষু বাংলাদেশি রোগীকে চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি রোগীটিকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রেও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে অসহযোগিতার আভিযোগ করেছেন স্বজনরা। শেষ পর্যন্ত সিএনজি’তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন খলিলুর রহমান নামের এই রোগী।
বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া খলিলুর রহমান (৪০) কুতুপালং গ্রামের পূর্বপাড়ার মীর কাশেমের ছেলে। স্থানীয় সূত্র জানায়, খলিলুর রহমান শুক্রবার (২৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বোনের বাড়িতে যাওয়ার সময় কুতুপালং বাজারের পাশে পূর্বপাড়া রাস্তায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত স্থানীয় কুতুপালং বাজার সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানতে চান রোগী রোহিঙ্গা কিনা। খলিলুর বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার বিষয়টি জানার পর চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানান ওই চিকিৎসক।
খলিলুলের স্বজনদের দাবি, প্রায় আধ ঘণ্টা আকুতি-মিনতি করার পরও খলিলুরকে চিকিৎসাসেবা দিতে রাজি হননি ওই চিকিৎসক। এক পর্যায়ে সবাইকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেয় তাদের। এসময় তারা উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার জন্য এমএসএফ’র অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু, ‘কোনো বাংলাদেশি নাগরিককে এমএসএম হাসপাতালে চিকিৎসা বা অন্যান্য সেবা দেওয়া হয় না’ বলে জানিয়ে দেন কর্তব্যরত ওই চিকিৎসক। পরে অটোরিক্সা (সিএনজি) যোগে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মারা যান খলিলুর রহমান ।
খলিলুর রহমানের ছোট ভাই জাফর আলম জানান, অসুস্থ হওয়ার সাথে সাথে খলিলকে কুতুপালংয়ে পার্শ্ববর্তী এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। ওই সময় এমএসএফ হাসপাতালে দায়িত্বরত ছিলেন জিয়া নামে এক ডাক্তার। তিনি আমাদের রোহিঙ্গা মনে করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসাসেবা শুরু করার আগে জানতে চান, খলিলুর রোহিঙ্গা কিনা। উত্তরে খলিলুর বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার বিষয়টি জানার পর চিকিৎসা করতে রাজি হননি ওই চিকিৎসক। পরে অনেক আকুতি মিনতি করেও রাজি করাতে পারিনি। এক পর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস সংকটাপন্ন হয়ে পড়ায় অক্সিজেন দেওয়ার জন্য হাতে-পায়ে ধরে অনুরোধ করি। কিন্তু, ওই ডাক্তার অক্সিজেনটা পর্যন্ত দেয়নি।
এই ব্যাপারে এমএসএফ কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জমান জানিয়েছেন, কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমএসএফ হাসপাতালে একজন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা না দেয়ার খবর তিনি পেয়েছেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যমুনা অনলাইন: আইকে/টিএফ
Leave a reply