গুলশানের বহুতল ভবনটিতে কী করে আগুন লেগেছিল তা এখনও অস্পষ্ট। লিফটের পাশে গাদাগাদি করে রাখা ক্যাবল লাইনের কারণেই আগুনের বিস্তার- এ সূত্র ধরেই এগোচ্ছে তদন্ত কমিটি।
ভবনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বে ইস্টার্ন লিমিটেডের দাবি, সেন্ট্রাল এসির কারণে আগুন ছড়িয়েছে বেশি; আর নেভাতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আগুন লাগার পর তা নেভাতে ছুটে আসেন অনেকেই। এদের কেউ কেউ ছিলেন প্রশিক্ষিত কমিউনিটি ফায়ার ফাইটার। কিন্তু তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আগুনের সূত্রপাত আর নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) ও তদন্ত কমিটির সদস্য লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এই ভবনে নানা সমস্যা আছে। আরও তদন্তের পর আগুনের উৎসের কারণ বিস্তারিত জানা যাবে। নিয়ম অনুযায়ী ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট নেয়ার কথা থাকলেও তা অমান্য করেছেন ভবন মালিক।
এদিকে, ঢাকা (উত্তর) সিটি মেয়র ঘটনাস্থলে গিয়ে জানান ক্যাবল লাইনের অব্যবস্থাপনার কথা। ঢাকা (উত্তর) সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডাকটিং লাইন ও ইলেকট্রিকের লাইন এক্ষেত্রে একই ডাগ দিয়ে উঠেছে। এই দুই লাইনের মাঝের যে সেপারেশন লাইনে কী দেয়া ছিল সেটা আমি তদন্ত করতে বলেছি।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার পর থেকেই ভবনটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল আর সিলগালা করার যে সিদ্ধান্ত তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন যে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত ও কীভাবে আগুন এতো বেশি ছড়ালো তা ধীরে ধীরে জানা যাবে, বলে জানিয়েছেন তারা।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, এরকম বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ৯টি নিয়ম মানতে হয় এ ভবনটির ক্ষেত্রে তার সবকটি মানা হয়নি। ভবন নির্মাণের আগে ফায়ার সার্ভিসের এনওসি নিলেও নির্মাণের পরে ফায়ার সার্ভিসের কোনো অনুমোদন ভবন নির্মাতারা নেননি। অর্থাৎ, ফায়ার সার্ভিসের নিয়ম যে ভবন নির্মাতা মানেননি তা পুরোপুরি স্পষ্ট।
তবে, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলছেন যে, ভবনটির ভেতরে দাহ্য পদার্থ ছিল। যদিও দাহ্য পদার্থটি ঠিক কী ধরনের দাহ্য পদার্থ তা এখনও স্পষ্ট করেননি তারা।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের ব্রিফিংয়ের আগে ভবনটিতে ফায়ার সার্ভিসের কিছু গাড়ি প্রবেশ করতে দেখা গেছে, যেগুলোতে করে ভবনটির কিছু জিনিসপত্র বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু, গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে এখনও বিস্তারিত কিছু জানাননি ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে, যে দাহ্য পদার্থের কথা বলা হচ্ছে সেটিই হয়তো থাকতে পারে গাড়িগুলোতে।
/এসএইচ
Leave a reply