Site icon Jamuna Television

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর: আর কতো রক্ত ঝরিয়ে থামবে এ যুদ্ধ?

আর কতো রক্ত ঝরিয়ে থামবে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ? বহুল আলোচিত এ প্রশ্ন অমীমাংসিত রেখেই ইউক্রেনে রুশ অভিযানের এক বছর পূর্ণ হলো। কোনো সমঝোতা তো দূরের কথা, সময়ের সাথে সাথে সংঘাত ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। একদিকে ইউক্রেনে বাড়ছে পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তা, অন্যদিকে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছেন পুতিন। যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ক্রাইমিয়া দখল কিংবা ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে চাপা উত্তেজনা চলছিলো কয়েকবছর ধরেই। যার প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ভোরের আলো ফোটার আগেই ইউক্রেনজুড়ে সাঁড়াশি হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। সূচনা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ইউরোপের সবচেয়ে বড় সামরিক সংকটের।

অভিযানের শুরুতেই কিয়েভের খুব কাছে চলে যায় রুশ বাহিনী। রাজধানীর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান নেয় ২৪ মাইল দীর্ঘ সেনাবহর। কিন্তু, ইউক্রেনের শক্ত প্রতিরোধের সূচনাও সেখানে। চারদিকে থেকে ঘিরে ফেলেও রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয় রাশিয়া। পিছু হটে একসময়।

পরে যুদ্ধ অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে ইউক্রেনের রুশ অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলে। তবে, মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়ে শক্তির জানান দিয়েছে রুশরা।

গত এক বছর ধরে চলা ভয়াবহ এ সংঘাতে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দু’দেশেরই। যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষের লক্ষাধিক সেনা নিহতের দাবি রাশিয়া-ইউক্রেন উভয় পক্ষের।

জাতিসংঘ বলছে, এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত বেসমারিক মারা গেছে অন্তত আট হাজার। আতঙ্কিত মানুষ দেশ ছাড়তে শুরু করলে ইউক্রেনের সীমান্তে নামে শরণার্থীর ঢল, দেখা দেয় ভয়াবহ মানবিক সংকট। দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় ৮০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সংঘাতের কারণে ভুগতে হচ্ছে গোটা বিশ্বকেই। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জ্বালানি তেল ও খাদ্য রফতানি। যার প্রভাব পড়েছে সবক্ষেত্রে; একদিকে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। মুদ্রাস্ফীতির জেরে নাকাল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো।

কয়েকবার আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। কিছুদিন পরপরই হামলা জোরদার করছে রাশিয়া। বেশ কয়েকবার পারমাণবিক হামলার হুমিকও দিয়েছে মস্কো। পশ্চিমা অস্ত্রে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছ থেকে জাগুয়ার টু ট্যাংকের মতো ভারি অস্ত্র পেতে শুরু করেছে কিয়েভ। আলোচনা হচ্ছে যুদ্ধ বিমান সরবরাহ নিয়েও।

এদিকে ইরান, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, পুতিনকে সামরিক সহায়তা করতে যাচ্ছে চীনও। যদিও, পশ্চিমাদের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশগুলো। আর, শুরু থেকেই অবশ্য মস্কোকে সমর্থন দিয়ে আসছে বেলারুশ। পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হচ্ছে তাতে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পাশাপাশি বাড়তে পারে পরিধি।

/এসএইচ

Exit mobile version