ভিক্ষা করে ৫০ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছেন! সেই পুরো টাকাই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করলেন
ভারতের তামিলনাড়ুর এক ভিখারি।
১৯৮০ সালে তামিলনাড়ু থেকে স্ত্রী এবং দুই পুত্রসহ মুম্বাইয়ে চলে যান পুলপান্দিয়ান। সেখানে ছোটখাটো চাকরিও করতেন তিনি। রোজগার করে দুই পুত্রের বিয়ে দেন তখন। স্ত্রী মারা গেয়েছেন ২৪ বছর আগে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পুত্রদের কাছেই গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুই পুত্র তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় তামিলনাড়ুতে ভিক্ষা শুরু করেন পুলপান্দিয়ান।
এখন দুই পুত্রের কেউই খেয়াল রাখে না তার। তাই ভিক্ষা করেই দিন কাটান পুলপান্দিয়ান। কিন্তু ৭২ বছর বয়সী পুলপান্দিয়ান ভিক্ষার টাকা নিজের জন্য খরচ না করে সব দান করলেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। ৫ বছর ধরে ভিক্ষা করে ৫০ লক্ষ টাকা জমিয়েছিলেন তিনি।
সিএনএন নিউজ১৮ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পুলপান্দিয়ান বলেছেন, আমার সংসারে কেউ নেই। এত টাকা নিয়ে আমি কী করব? স্ত্রী বহু দিন আগে মারা গেছেন। ছেলেদেরও বিয়ে হয়ে গেছে। ওদের এখন আলাদা সংসার। আমার দেখাশোনা করে না ছেলেরা। তাই একা একা ঘুরে বেড়াই, ভিক্ষা করে নিজের খরচ চালাই।
পুলপান্দিয়ান জানান, কোভিড মহামারি চলাকালীন ২০২০ সালের মে মাসে প্রথম তিনি ত্রাণ তহবিলে টাকা দান করেন। প্রথম বার ১০ হাজার টাকা দান করেছিলেন তিনি। তারপর তিনি তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরেটের অফিসে গিয়ে টাকা দান করেছেন।
৭২ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ জানান, ৫ বছর ধরে তিনি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা জমিয়েছিলেন। নিজের একার সংসারে কোনও খরচ হয় না বলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, সম্পূর্ণ টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করে দেবেন। শুধুমাত্র ত্রাণ তহবিলেই নয়, শ্রীলঙ্কার তামিলদের সাহায্য করতে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের জন্যও টাকা দিয়েছেন তিনি।
এর আগে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলা ঘুরে ঘুরে সরকারি দফতরে গিয়ে টাকা দান করেছেন পুলপান্দিয়ান। সমাজসেবায় অবদানের জন্য ২০২০ সালে মাদুরাই জেলা প্রশাসন তাকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।
এনবি/
Leave a reply