দলের পারফর্মেন্সের দিক থেকে সফল হলেও, অধিনায়ক হিসাবে জিততে পারেননি কোনো আইসিসি ট্রফি। সে কারণে তাকে বলা হয় ব্যর্থ অধিনায়ক। তবে আইসিসির টুর্নামেন্ট বাদ দিলে দেশ ও দেশের বাইরে অনেক অধিনায়কের চেয়ে বেশি সফল ছিলেন ভিরাট কোহলি। নিজ অধিনায়কত্বকে ট্রফির হিসেবে বিচার করেন না আধুনিক ক্রিকেটের এই গ্রেট। তার মতে, শিরোপা জয়ের চেয়েও ভালো ও জয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেটা দীর্ঘমেয়াদী।
খেলোয়াড় হিসাবে তিনি মারকুটে ব্যাটার, সফলতার শীর্ষে উঠে একের পর এক রেকর্ড গড়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ক্রিকেটার হিসেবে সম্ভাব্য অনেক রেকর্ডই গড়েছেন ভিরাট কোহলি। নিজ দেশের অধিনায়ক হিসেবে সকল ফরম্যাটে ভারতকে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হিসেবে গড়ে তোলায় সৌরভ গাঙ্গুলি, মহেন্দ্র সিং ধোনির পর সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখেন ভিরাট কোহলি। কিন্তু আইসিসির কোনো ট্রফি জিততে না পারায় অধিনায়ক হিসেবে তাকে ব্যর্থ ভাবা হয়। সম্প্রতি আইপিএলে নিজের দল আরসিবির পডকাস্টিং’এ অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন ভিরাট কোহলি।
অধিনায়ক থাকা অবস্থায় দলকে কোন আইসিসি ট্রফি এনে দিতে পারেননি কোহলি। তবে দলের পারফর্মেন্সের দিক বিবেচনা করলে তাকে ব্যর্থ অধিনায়ক বলার সুযোগ নেই। পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলছে, সাদা পোশাকে ভিরাটের নেতৃত্বে ৬৮ ম্যাচ খেলে ৪০টি জিতেছে ভারত; যা ভারতের যে কোনো অধিনায়কের থেকে বেশি। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ৬০ টেস্টে ২৭টিতে ও সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বে ৪৯ টেস্টে ২১টিতে জিতেছে ভারত।
সাদা বলেও সফল কোহলি, ওয়ানডেতে ৯৫ ম্যাচ খেলে ৬৫টিতে এবং টি-টোয়েন্টিতে ৫০ ম্যাচে খেলে ৩০টিতে জিতেছে ভারত। তবে নেই কোনো আইসিসি ট্রফি। সে প্রসঙ্গে ভিরাত কোহলি বলেন, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আমরা জিতিতে পারিনি। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছি, ২০১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছি। এরপরও লোকে আমাকে ব্যর্থ অধিনায়ক বলে।
কিছুটা আক্ষেপ থাকলেও ট্রফির হিসেবে নিজেকে বিচার করেন না কোহলি। দলে যে সংস্কৃতি তিনি তৈরি করেছেন তাতে গর্ববোধ করেন। সেই সাথে, খেলোয়াড় হিসাবে বিশ্বকাপ জয়ের অংশ হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবানও মনে করেন তিনি। ভিরাট কোহলি বলেন, দল হিসেবে যা অর্জন করেছি, দলীয় সংস্কৃতির যে পরিবর্তন এসেছে, এই বিষয়টিই গর্বের। যে কোনো টুর্নামেন্ট কোনো একটা নির্দিষ্ট সময়ে হয়, তবে সংস্কৃতি গড়তে দীর্ঘ সময় লাগে। খেলোয়াড় হিসাবে আমি ২০১১ ও ২০১৩ বিশ্বকাপ জিতেছি। অনেক খেলোয়াড় ক্যারিয়ার জুড়ে কোনো বিশ্বকাপ জিততে পারে না। সেদিক দিয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।
নিজের ব্যর্থতাগুলোকে পাশে রেখে সফলতার দিকেই বেশি নজর দেন কোহলি। যা তাকে আরও ভালো করতে সাহায্য করে। কোহলি বলেন, যখন কিছু ঘটার কথা, তখনই তা ঘটে। শচীন টেন্ডুলকার তখন খেলেছেন তার ৬ষ্ঠ বিশ্বকাপ। আর সেবার তিনি হন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের অংশ ছিলাম আমিও। তাই যখনই নিজের ক্যারিয়ারের দিকে তাকাই আর ভাবি যে, কী ভুল হয়েছিল তখন মনে পড়ে অনেক কিছুই ঠিকঠাক ঘটেছে। আর সেসবের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুন: এরা আসলে বিভ্রান্ত সুপারস্টার; শোয়েবের উদ্দেশে রমিজ
/এম ই
Leave a reply