৮৭ বছর বয়সী মিশরীয় জুবাইদার স্কুলযাত্রা

|

বয়স পেড়িয়েছে ৮৭। এই বয়সেই স্কুলে ভর্তি হয়েছেন মিশরের জুবাইদা নামের এক নারী। রক্ষণশীল বাবার নারী শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা, বিয়ের পর সংসার নিয়ে ব্যস্ততা; প্রবল ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও কখনও যাওয়া হয়নি স্কুলে। শিক্ষিত হওয়ার অধরা সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পেয়েছেন এই প্রবীন বয়সে। আর সাথে সাথেই তা লুফে নিয়েছেন তিনি।

আট সন্তানের জননী, নাতি-নাতনি রয়েছে ১৩ জন; তাতে কী? ক্লাসে মনোযোগী ছাত্রী ৮৭ বছর বয়সী মিশরের জুবাইদা আব্দ এলাল। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জীবনের শেষ সময়ে এসে শুরু করেছেন লেখাপড়া। ‘শিক্ষার কোনো বয়স নেই’ বহুল প্রচলিত এই প্রবাদের যথার্থতা প্রমাণ করলেন তিনি।

লেখাপড়ার প্রবল আগ্রহ ছিলো শৈশবেই। রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম, তাইতো ভাইয়েরা পড়ার সুযোগ পেলেও জুবাইদা পাননি। প্রবীণ বয়সে সেই আক্ষেপ ঘুচাতেই স্কুলে তিনি।

জানতে চাইলে জুবাইদা বলেন, আমার বাবার ধারণা ছিল মেয়েদের শিক্ষার দরকার নেই। তাই কখনও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। এ কারণে যখনই লেখাপড়ার সুযোগ পেলাম তা লুফে নিলাম। শিক্ষক আমাকে বাসায় এসে পড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্কুলজীবনটা আমি উপভোগ করতে চাই। ক্লাসরুমে বসেই তাই ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

৮৭ বছর বয়সী জুবাইদা আরও বলেন, সরকার তিন বছরে অন্তত ১০ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরইমধ্যে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

কর্তৃপক্ষ জানায়, জুবাইদার মধ্যে লেখাপড়ার আগ্রহ প্রবল। তার বয়স নিয়ে আমরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরে মন্ত্রণালয়ের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করি। মন্ত্রণালয়ও জুবাইদার আগ্রহ দেখে বিষয়টিতে সাদরে গ্রহণ করেছে।

ফুটপাতে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে নিজের ছেলে-মেয়েদেরও লেখাপড়া শিখিয়েছেন এই নারী। এখনও আশপাশে নিরক্ষর কাউকে দেখলেই বোঝাতে চান শিক্ষার গুরুত্ব।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply