স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:
অবশেষে তিনদিন পর রংপুর মহানগরীর দমদমা ব্রিজের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গ্রেনেড গর্তের ভেতর ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সেনাবাহিনীর বিশেষ বোম ডিসপোজাল টিম বধ্যভূমির অদূরে গ্রেনেডটি গর্তখুড়ে মাটিচাপা দেয়ার পর
বিস্ফোরণ ঘটায়। খোলা আকাশে ওই গ্রেনেড পরে থাকার বিষয়ে রোববার সংবাদ প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ওসি নাজমুল কাদের জানান, শুক্রবার সকালে দমদমা ব্রিজের পাশে পানিতে কাজ করার সময়ে তাহমিনা নামের এক গৃহবধূ ওই গ্রেনেড সদৃশ বস্তুটি পেয়ে প্রথমে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বস্তুটি গরম হয়ে গেলে ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে থানায় জানানো হয়। খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ গ্রেনেড সদৃশ ওই বস্তুটি উদ্ধার করে বধ্যভূমির পাশে গামলার পানিতে পুলিশি পাহারায় সংরক্ষণে রাখা হয়। পরে আদালতের আদেশসহ সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে বিষয়টি জানানো হয়। সোমবার সকাল ৯টায় সেনা বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি হেভিওয়েট টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা গ্রেনেডটি ২ ঘণ্টা ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা করে। বধ্যভূমির অদূরে একটি খোলা স্থানে গর্ত করে বোমাটি মাটি চাপা দিয়ে রাখে। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় তারা বিশেষ পদ্ধতিতে গ্রেনেডটি বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পুরো এলাকা কালো ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।
গ্রেনেডটি উদ্ধারকারী স্থানীয় তাহমিনা নামের গৃহবধূ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া বারোটায় জানান, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দমদমা ব্রিজের নিচে ঘাঘট নদীতে কাজ করতে গিয়ে পানির মধ্যে ওই গ্রেনেড সদৃশ জিনিসটি পাই। তখন সেটি শ্যাওলা দিয়ে মোড়ানো ছিল। আমি পাথরের শিল মনে করে বাড়িতে নিয়ে যাই। এরপর শ্যাওলাগুলো পরিষ্কার করার পর সেটি গরম হয়ে ওঠে। তখন ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। পুলিশ গিয়ে বস্তুটি উদ্ধার করে দমদমা বদ্ধভূমির পাশে গামলার পানিতে রেখে দেয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকেই সেখানে বস্তুটি পড়েছিল এবং একজন পুলিশ সদস্য পাহারা দিচ্ছিলেন।
ওসি জানান, গ্রেনেডটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার। মুক্তিযুদ্ধের সময় দমদমায় পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র হাজার হাজার মানুষকে ধরে নিয়ে গ্রেনেড ফাটিয়ে হত্যা করেছিল। অনেককে হত্যার পর মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিল। সরকারিভাবে দমদমার ওই এলাকাটি একাত্তরের বদ্ধভূমি হিসেবে পরিচিত।
ইউএইচ/
Leave a reply