ইউক্রেন যুদ্ধ ও আইএমএফের অজুহাতে টাকা তুলে নিচ্ছে সরকার: জিএম কাদের

|

সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এমপি।

স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর:

সরকারের হাতে টাকা না থাকায় ইউক্রেন যুদ্ধ ও আইএমএফ এর অজুহাত দিয়ে সরকার বিদ্যুৎসহ দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগনের কাছ থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে- বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।

বুধবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রংপুর মহানগরীর সেনপাড়ায় পৈত্রিক নিবাস স্কাইভিউতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সরকারের হাতে বাংলাদেশি টাকাও নেই, বিদেশী ডলারও নেই। সরকার অর্থকষ্টে ভুগছে এবং তারা জনগণের কাছ থেকে সেই টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তারা একেকসময় একেকধরনের অজুহাত দিচ্ছেন। কখনও আইএমএফ এর অজুহাত কখনও ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাত দেয়া হচ্ছে।

জিএম কাদের আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়াবেন সেটা ঠিক আছে, কিন্তু দেশের মানুষকে মেরে ফেলে তো আপনারা রাজনীতি করতে পারেন না। আপনাকে দেখতে হবে, যেটা বাড়াচ্ছি সেটা যদি জনগণ সহ্য করতে না পারে তাহলে অন্য বিকল্প নিতে হবে। অন্যান্য দেশে ক্যাশ ইনসেনটিভ দেয়া হচ্ছে। মানুষকে নানাভাবে টাকা দেয়া হচ্ছে। আমাদেরকেও কোনো না কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, মানুষকে বাঁচাতে হলে রেশনিং সিস্টেম চালু করতে হবে। তাহলে মানুষ অন্তত বাঁচবে। তারপর সরকার কী করতে পারবেন সেটা দেখা যাবে। এ কথা এজন্য বলছি যে আপনারা (সরকার) হাজার কোটি, লক্ষ কোটি টাকার প্রজেক্ট এখনও নিচ্ছেন। এই প্রজেক্টগুলো কিছুদিনের জন্য বাদ দিয়ে সেই টাকায় জনগণকে ইনসেনটিভ দেন। তাহলে দেশের মানুষ যদি বেঁচে থাকে, ভবিষ্যতে এগুলো করা যাবে। সেটাই হলো আমাদের দাবি। এবং আমরা এই রাজনীতিটাই করতে চাচ্ছি।

জিএম কাদের আরও বলেন, জনবিচ্ছিন্ন উন্নয়ন আমরা চাই না। জনগণের কল্যাণ কবে হবে আমরা জানি না। কিন্তু বড় বড় প্রজেক্ট হচ্ছে। বিভিন্নভাবে সেগুলোতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে, এরকম অভিযোগ আসছে। অনেক চুক্তি করা হচ্ছে যেগুলো দেশের স্বার্থবিরোধী, জনগণের স্বার্থ বিরোধী। সরকারকে এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জনগনকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে সামনের দিকে আরও খারাপ দিন আসবে বলে আমরা আশংকা করছি।

বিরোধীজোটের ওপর দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, সবার কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র রক্ষা হবে না। আওয়ামীলীগ ও বিএনপিকে দেশের ৮০ ভাগ মানুষই চায় না। তারা বিকল্প দলকে খুঁজছে। সে কারণেই জাতীয় পার্টি জনগনের কাছে বিকল্প দল হিসেবে আস্থা অর্জন করতে কাজ করে চলেছে।

এ সময় তার সাথে ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আদিলুর রহমান এমপি, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, মহানগর ছাত্র সমাজের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত আসিফসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এর আগে, ৫ দিনের রংপুর ও লালমনিরহাট সফরের অংশ হিসেবে স্কাইভিউতে গেলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) তিনি লালমনিরহাট সফর করবেন বলে জানানো হয়েছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply