ইউএনও’র থাপ্পড়ে হাসপাতালে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

|

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানকে থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। শুধু থাপ্পড়ই নয়, অভিযোগ আছে- জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে দেড় ঘণ্টা গাড়িতে অবরুদ্ধ রাখারও। পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে এবং গালিগালাজ করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয় মিজানুরকে। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন।

বুধবার (১ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের কাঁঠালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন মারধরের শিকার মো. মিজানুর রহমান। চোখ ও কানে গুরুতর আঘাত থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।

আহত মো. মিজানুর রহমান ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের দুইবারের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা।

কাঁঠালতলা এলাকার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, খুলনা-মাওয়া মহাসড়ক দিয়ে উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তার গাড়িটি ফলতিতার দিকে যাচ্ছিলো। মাত্র তিন সেকেন্ডের ব্যবধানে গাড়িটি পেছনে আসে। তখন পার্শ্ব রাস্তা থেকে আসা মিজানুর রহমানের মোটরসাইকেলের সাথে ইউএনও’র গাড়িটির ঘষা লাগে। প্রথমে গাড়ি চালক নিচে নামেন। পরে ইউএনও গাড়ি থেকে নামেন এবং মিজানুরকে থাপ্পড় দেন। পরে মিজানকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যান ইউএনও।

প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রথমে গাড়ি চালক নেমে এসে মিজানুর রহমানকে ধমকায়। পরে ইউএনও গাড়ি থেকে নেমে মিজানুরকে থাপ্পড় দেন।

আহত সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান জানান, বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে আমার গরুর ফার্মে যাচ্ছিলাম। কাঁঠালতলা মোড় এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িটি পেছনের দিকে আসে। তখন ইউএনও‘র গাড়ির সাথে আমার মোটরসাইকেলের সামান্য ঘষা লাগে। সাথে সাথে ইউএনও‘র গাড়ি চালক এসে আমাকে গাড়িতে উঠতে বলে। গাড়িতে না উঠলে, ইউএনও নিজে গাড়ি থেকে নেমে এসে আমাকে থাপ্পড় দেন। তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ির পেছনে ওঠান এবং গালিগালাজ করেন। গাড়িতে করে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে যান। সেখানে লোকজন জড়ো হলে আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এদিকে উপজেলার প্রবীন রাজনীতিবিদ ও সাবেক জনপ্রতিনিধিকে মারধরের খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইউএনও‘র কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

এ প্রসঙ্গে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রত্যয় দাস জানান, মো. মিজানুর রহমান বেশ অসুস্থ। তার মুখ-কান ফোলা থাকায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিকে থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন,
তাকে কথা বলার জন্য গাড়িতে ওঠানো হয়েছিল। পরিচয় জানার পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি।

এ প্রসঙ্গে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজীজুর রহমান বলেন, সরকারি কর্মচারি হিসেবে শারীরিকভাবে কাউকে আহত করার কোনো এখতিয়ার কারো নেই। কেউ অন্যায় করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply