ছাত্রীদের বিষ প্রয়োগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া উচিত: আয়াতুল্লাহ খামেনি

|

ইরানে স্কুলছাত্রীদের বিষ প্রয়োগের ঘটনায় প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এটিকে ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। খবর সংবাদ সংস্থা এপির।

গত নভেম্বর থেকে ইরানের ২১টি প্রদেশের অর্ধ শতাধিক স্কুলের নারী শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে। অভিযোগ উঠে, বিষ প্রয়োগের। এ ঘটনায় কারও মৃত্যু না হলেও অন্তত ৪ শতাধিক শিশুর অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে।

হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের বেশিরভাগই জানায়, কোনো একটা কেমিক্যালের গন্ধ পায় তারা। এরপরই হঠাৎ করে সব অন্ধকার হয়ে যায়। ঝুঁকি কেটে গেলেও কারও কারও মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা, কেউ কেউ আবার শরীর ব্যাথা, দুর্বলতা আর অবসাদে ভুগছে।

এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাস চলছিল। হঠাৎ করে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। পারফিউমের মতো গন্ধ পেয়েছি। মনে হচ্ছিল আমার পাকস্থলী পুড়ে যাচ্ছে। আর সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেলো। অনেক চেষ্টা করেও ওখান থেকে বের হওয়ার পর ঠিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারি। খুব কাশি হয়েছিল।

একইভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন শিক্ষকরাও। অনেকের চোখ-মুখ জ্বালা করছিল বলেও জানান। ইলাম ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্সের প্রধান জসিম মোহাম্মদি বলেন, আমি সাত ছাত্রীর চিকিৎসা করেছি। ফুসফুসের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল এসেছে। তবে সবাই খুব দুর্বল বোধ করছে।

গত কয়েক মাস ধরে এসব ঘটতে থাকলেও ইরান প্রশাসন সম্প্রতি এ ঘটনা স্বীকার করে। তবে কী ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার হয়েছে, কারা এর সাথে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্যই বা কী সেসব কোনো তথ্যই দেয়নি সরকার। অবশ্য প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির দাবি, এ কাজ শত্রুপক্ষের।

সোমবার (৬ মার্চ) প্রথমবারের মতো বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। তিনি বলেন, অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। গোয়েন্দা ও পুলিশ অবশ্যই এই অপরাধে জড়িতদের সমূলে খুঁজে বের করবে। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পেতে হবে তাদের। এটা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। সবচেয়ে নিষ্পাপ শিশুদের সাথে এমন আচরণ করা হয়েছে, এটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, একই ধরনের ঘটনা আফগানিস্তানে হয়েছিল ২০০৯ থেকে ২০১২ সালে। শত শত স্কুল ছাত্রী অদ্ভুত গন্ধ পাওয়ার আর বিষপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছিল দেশটিতে। কেবল মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ ঘটনা ঘটায় নারীশিক্ষা বিরোধী তৎপরতার কথা উঠছে। তবে নারীশিক্ষা ইস্যুতে ইরানে এর আগে কখনও এমন উগ্রবাদী আচরণ দেখা যায়নি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply