আটলান্টিসের কথা জানা আছে? প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে উন্নত ও জনবহুল একটি শহর রাতারাতি ডুবে যায় সমুদ্রের নিচে, অন্তত পৌরাণিক উপকথা তো তাই বলে। সেই রহস্যময় শহরের খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া না গেলেও অদূর ভবিষ্যতে ঠিক তেমনই দশা হতে চলেছে আধুনিক এক জনবহুল শহরের। প্রতিনিয়ত সাগরের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে সে শহর। বিপদগ্রস্ত এই জনপদটি হলো ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাতার্কা। আর তাই জনগণের নিরাপত্তার কথা ভেবে রাজধানী স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছে দেশটির সরকার। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার নতুন রাজধানী হবে সম্পূর্ণ একটি বনাঞ্চলের মাঝখানে। খবর এপির।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত হারে সাগরে তলিয়ে যাওয়া শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে জাকার্তা। গবেষণা বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যেই শহরটির এক তৃতীয়াংশ তলিয়ে যাবে জাভা সাগরের নিচে। আর এ বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই নতুন পরিকল্পিত রাজধানী শহর নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। মূলত অতিরিক্ত মাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে শহরটি দিন দিন মাটিতে দেবে যাচ্ছে। সেই সাথে দূষণ তো আছেই। তাই রাজধানী স্থানান্তর করা অতি আবশ্যক হয়ে পড়েছিল ইন্দোনেশিয়ার জন্য।
সব বিষয় বিবেচনায় জাকার্তা থেকে ২ হাজার কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বোর্নিওতে নির্মিত হচ্ছে নতুন শহর ‘নুশানতারা’। যার অর্থ দীপপুঞ্জ। দেশটির স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগামী বছরই ১৫ লাখ সরকারি আমলাকে স্থানান্তর করা হবে সেই শহরে। সেখানে বসবাসের জন্য তাদের সব সুবিধা দেয়া হবে। তবে ২০৪৫ সালের আগে সম্পূর্ণ শহরের কাজ শেষ হবে না বলে জানিয়েছে সরকার।
নতুন এ শহরটি তৈরি হবে বনভূমির মাঝে। শহরের ৬৫ শতাংশেই থাকবে বনাঞ্চল। ফলে শহরের যে দিকে চোখ যাবে শুধু সবুজ আর সবুজ। অবশ্য এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরাও। তাদের মতে, বনের মাঝে শহর হওয়ায় গাছ কাটার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সাথে বিপন্ন হতে পারে অনেক জীব বৈচিত্রও।
এসজেড/
Leave a reply