রিয়াজ রায়হান:
চারদিন পেরোলেও গুলিস্তানে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মূল নকশা হাতে পায়নি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মূল নকশা হাতে পেলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে ভবনটি কতোতলা পর্যন্ত বৈধ ছিল। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পিলার মেরামতে কাজ করছে রাজউক। দেড় থেকে দুইমাস পরে জানা যাবে ভবনটি ব্যবহার করা যাবে কি-না।
শুক্রবার (১০ মার্চ) বিস্ফোরণের চতুর্থ দিনে সকাল থেকেই চলছে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পিলার রক্ষার কাজ। আপাতত লোহার পাইপ দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা রাজউকের। সংস্থাটি এ কাজের দায়িত্ব দিয়েছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে।
সকালে ঘটনাস্থলের সার্বিক কার্যক্রম তদারকিতে যান রাজউক কর্মকর্তারা। জানান, ভবনটি ভাঙ্গার বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নয়। ভবনটিকে কতোটা ঝুঁকিমুক্ত করা যায় আপাতত সেদিকেই নজর তাদের।
রাজউক কারিগরি কমিটির সদস্য রঞ্জন মণ্ডল এ প্রসঙ্গে বলেন, গত রাত ৯টা থেকে এখন পর্যন্ত ৪টা কলামে আমরা প্রপিং করেছি। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে করা হবে। তবে এই মুহূর্তে জরুরি হলো সামনের দিকে ব্লক করা। কংক্রিটের বা অন্যকোনো ব্লকার দিতে হবে। কাজের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভবনের সামনের রাস্তাও ছেড়ে দিতে হতে পারে।
তিনি আরও জানান, ভবনটির মালিকের দেয়া দুটি নকশা হাতে পেয়েছেন তারা। যার একটিতে পাঁচতলার অনুমোদন রয়েছে, সে হিসেবে, অনুমোদন ছাড়াই ওপরে দুইতলা বাড়ানো হয়েছিলো। আরেকটি বাণিজ্যিক নকশায় দশতলার কথা বলা হলেও সেটির অনুমোদন নিয়ে নিশ্চিত নন রাজউক কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে রাজউক কারিগরি কমিটির সদস্য রঞ্জন মণ্ডল বলেন, ভবন মালিকরা একটা দশতলার ড্রয়িংও বের করেছেন। কিন্তু, সেটির ওপরে আমরা অনুমোদনের কোনো স্বাক্ষর পাইনি। ওনারা বলেছেন যেন, ওনারা রাজউকে আবেদন করেছেন ও তাদের অনুমোদনও আছে। কিন্তু, এই অনুমোদনের কপি এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি তারা।
ধ্বংসস্তুপের কারণে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত দল। শুক্রবার সকালে আলামত সংগ্রহের উদ্দেশে ভবনটিতে যান সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। ভেতরে প্রবেশ করতে না পারলেও ভবনের বাইরে থেকে সংগ্রহ করেন বিস্ফোরণের আলামত।
এ প্রসঙ্গে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, বিস্ফোরণের ধাক্কায় গ্রিল ছিটকে বেরিয়ে গেছে। কোনো এক্সপ্লোসিভ বা গ্যাস ছিল কি না সেটি আমরা পরীক্ষা করতে পাঠাবো। ভেতরে যাওয়া গেলে আরেকটু ভালভাবে পুরো ব্যাপারটা আমরা তদন্ত করতে পারতাম।
প্রসঙ্গত, বিস্ফোরণে ভেঙ্গে পড়া ভবনের নিচে এখনও পানি জমে আছে। এ কারণে কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে পানি অপসারণের কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।
/এসএইচ
Leave a reply