তিন মাসেও গ্রেফতার হয়নি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ছিনিয়ে নেয়া জঙ্গিরা, শনাক্ত হয়নি অবস্থানও

|

ঢাকার আদালত থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার পেরিয়ে গেছে তিন মাস। কিন্তু এখনও অধরা পলাতক জঙ্গিরা। তারা এখন কোথায় আছে তাও জানেন না গোয়েন্দারা। মামলার তদন্ত সংস্থা সিটিটিসি বলছে, শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে পলাতক জঙ্গিদের। অবশ্য র‍্যাব প্রধান বলেছেন, দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়া এবং এখনও গ্রেফতার না হওয়ার পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়হীনতাই দায়ী।

গত নভেম্বরে দিনে-দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে খোদ রাজধানীতে। ওইদিন পুরান ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেয়ার পথে হামলা করে জঙ্গিরা। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের চোখে স্প্রে করে আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ও মাইনুল হাসান শামীম নামের দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়। এ দুই জঙ্গি প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন ও ব্লগার অভিজিত রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ওই দিনই ২০ জনের নাম উল্লেখসহ ২১ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে পুলিশ। যার তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)। যদিও এখন পর্যন্ত এই মামলার তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। তবে গোয়েন্দারা বলছে, জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। মিশনে অংশ নিয়েছিল অন্তত ২০ জন। পরিকল্পনা ছিল ৪ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার।

এ নিয়ে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, চারজন জঙ্গিকেই ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে আমাদের একজন কনস্টেবল বাকি দুই জঙ্গিকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা অনেক আগেই তাদের করা ছিল বলেও জানান তিনি।

এখন পর্যন্ত জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার মিশনে অংশ নেয়া ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি। তবে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিনিয়ে নেয়া দুই জঙ্গি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে তারা দেশের ভেতরই আছে। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি, অনেক দূর এগিয়েছিও। আশা করছি পলাতক জঙ্গি ও এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে আমরা সফল হবো।

পতালক জঙ্গিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে র‍্যাবও। যদিও র‍্যাব প্রধান জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়হীনতাকে দুষছেন।

র‍্যাবের ডিজি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, এ ঘটনা এককভাবে পুলিশের ব্যর্থতা নয়। শুরু থেকেই সমন্বয়হীনতার অভাব ছিল। জঙ্গিদের নিয়ে আদালতে আসার সময় যাদেরকে তথ্য দেয়ার কথা ছিল তা দেয়া হয়নি, সেখানে যতজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের উপস্থিত থাকার কথা ছিল, তাও ছিল না। সব মিলিয়ে একটি বড় গ্যাপ ছিল, আর সে কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, ৯ বছর আগে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে ছিনিয়ে নেয়া জঙ্গি সালাউদ্দিন এখনও গ্রেফতার হয়নি। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, সে ভারতে আত্মগোপনে আছে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply