তামাকপণ্যে কর বৃদ্ধির দাবিতে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন

|

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের পূর্বে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য উচ্চ হারে বাড়ানোর দাবিতে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন টাঙ্গাইল জেলার বিড়ি শ্রমিকগণ।

মানববন্ধনে বিড়ি শ্রমিক নেতারা দেশে তামাকের স্বাস্থ্যের ক্ষতির ভয়াবহতা কমাতে বিড়ি শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি করেন।

বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তামাকপণ্যের বিদ্যমান কর ব্যবস্থা সংস্কার করলে সিগারেটের ব্যবহার ১৫.১% থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩.৯২% হবে। প্রায় ১৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে এবং প্রায় ১০ লক্ষ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ লক্ষ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। অন্যান্য স্তরের তুলনায় নিম্ন স্তরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের ধূমপায়ীকে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করবে এবং উচ্চ স্তরগুলোতে সিগারেটের দাম বাড়লে ধূমপায়ীদের সস্তা ব্রান্ড বেছে নেয়ার আগ্রহ কমবে।

মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লুতফর রহমান বলেন, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকায় প্রতিনিয়তই আমরা নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, মানসিক অবসাদ ইত্যাদির সম্মুখীন হই। এই প্রক্রিয়ায় আমরা নিতান্তই জীবিকার তাগিদে যুক্ত হয়েছি। তবে আমরা চাই তামাক পণ্যের ওপর উচ্চ কর আরোপ করা হোক এবং মূল্য বাড়ানো হোক। পাশাপাশি আমাদের (বিড়ি শ্রমিকদের) বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার সুযোগ দেয়া হোক।

টাঙ্গাইল বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ জয়মনি বেগম বলেন, যেহেতু বারংবার কর বৃদ্ধি করেও নিম্ন স্তরের সিগারেট ও বিড়ির দাম সুলভ রয়ে যাচ্ছে, তাই নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরী কর আরোপ করার। নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বাড়ান, যাতে সেটি জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।

টাঙ্গাইল বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জনাব জসিম উদ্দিন দাবি তোলেন, প্রতি প্যাকেট বিড়ির দাম সর্বনিম্ন ৫০ টাকা করা উচিত, যাতে নিম্ন আয়ের মানুষ বিড়ি সেবনে নিরুৎসাহিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বিড়ি শ্রমিকদের মধ্য থেকে আরও অনেকেই তামাকপণ্যের কর বৃদ্ধির দাবিতে বক্তব্য দেন। পাশাপাশি বিড়ি কারখানাগুলোতে শিশু শ্রম বন্ধ, স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে বরাদ্দ বাড়ানো, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে উদ্যোগ নেয়া, মজুরি বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন। মানববন্ধন শেষে বিড়ি শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেন।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply