ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম ভর্তি হয়েছেন কোনো ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী। অঙ্কিতা ইসলাম ভর্তি হয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক্সিকিউটিভ এমবিএ’তে। তার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার লড়াইটা অনেক দীর্ঘ।
নাম ছিল জাহিদুল ইসলাম। বড় হতে হতে পাল্টে যেতে থাকে তার ভালো লাগা পোশাক, অলঙ্কার। পছন্দ তালিকায় যুক্ত হয় শাড়ি, চুড়ি। নিজের মধ্যে বয়ে বেড়ানো তার এই নতুন পৃথিবী তখনো অনেকেই মানতে নারাজ।
এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে টাঙ্গাইলের সরকারি সাদত কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক পাশ করেন অঙ্কিতা। এরইমধ্যে সাহস করে মনের সাথে শরীরের পরিবর্তন নিয়েও চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। ঘরছাড়া হয়ে বনে যান পুরোপুরি অঙ্কিতা ইসলাম। স্বপ্নচূড়ায় পৌঁছানোর আরেকধাপ এগিয়ে অঙ্কিতা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী।
ভর্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে অঙ্কিতা বলেন, এখানে ভর্তি হতে এসে এখানকার খরচ দেখে ভেবেছিলাম, এতো খরচ করে আমার মতো একজনের লেখাপড়া করা সম্ভব না। এরপর আমাদের মাননীয় উপাচার্য স্যারের সাথে দেখা করি। স্যার আমার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা শোনেন এবং আমাকে এখানে একটি ট্রান্স ফ্রেন্ডলি পরিবেশের নিশ্চয়তা দেন।
দেশের সব থেকে সেরা বিদ্যাপীঠে পড়ার সুযোগ পেলেও খরচের চিন্তায় তার ঘুম হারাম। বাকিরা কিভাবে নেবেন সে চিন্তাও তার পিছু ছাড়েনি। তবে এগিয়ে যাওয়ার পথে তাকে সাহস জুগিয়েছেন অনেকেই।
সাউথ এশিয়ান ইয়াং অ্যান্ড কুইয়্যার এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের কান্ট্রি লিড হো-চি-মিন ইসলাম বলেন, হিজড়া অথবা ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির মানুষদের জন্য প্রতিটি পাবলিক ইউনিভার্সিটির দুটো করে সিট বরাদ্দ করা উচিত। এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচিত প্রতি বছর ১ জন করে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ করে দেয়া। তাহলে এই সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর চিত্রই বদলে যাবে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পড়ার সুযোগ করে দিতে পেরে সন্তুষ্টির কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অঙ্কিতাসহ পিছিয়ে পড়াদের জন্য অনুকুল পরিবেশ তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য।
পড়াশোনার পাশাপাশি বর্তমানে এক বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন এই রূপান্তরিত শিক্ষার্থী।
এটিএম/
Leave a reply