ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে। এরপর গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
বর্তমানে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাহি। এই অবস্থায় মাহিকে গ্রেফতার, রিমান্ড আবেদন ও গর্ভধারিণী মাকে জেলে প্রেরণ পুরো ব্যাপারটি নিয়ে মুখ খুললেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। শনিবার বিকেলে অভিনেত্রী তার ফেসবুক প্রোফাইলে বিষয়টি নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন।
তিনি লেখেন, অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাত্রই খবরে পড়লাম, পুলিশ তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করলেও আদালত তা মঞ্জুর করেননি। মাহি জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু দেশের সব নাগরিকের মতো তিনিও আইনের অধীন।
অভিনেত্রী তার লেখায় আরও বলেন, তবে এই কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, তিনি এখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার অভিযোগের তদন্ত চলুক। কিন্তু একজন গর্ভধারিণী মায়ের এবং তার সন্তানের যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।
রিমান্ড মঞ্জুর না করায় আদালতকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অভিনেত্রী। পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়ে জয়া লেখেন, রিমান্ড মঞ্জুর না করার জন্য বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশের কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করবো, মা আর অনাগত শিশুর যেনো কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে সংবেদনশীল থাকবেন।
এর আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় মাহিকে। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ইমিগ্রেশন অফিসাররা জানান, বোরকা পরে এবং হুইল চেয়ারে করে বিমান থেকে নেমেছিলেন মাহি। ইমিগ্রেশন শেষে অফিসাররা তাকে তুলে দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।
সৌদি আরব থেকে বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটে জেদ্দা থেকে ঢাকায় আসেন মাহি। শনিবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মাহিকে বহন করা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ৪ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজের ৬ নম্বর বেল্টে তার লাগেজ ছিল।
এর আগে, ফেসবুক লাইভে মানহানিকর তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি রাকিব সরকার এবং ২ নম্বর আসামি মাহিয়া মাহি।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি অভিযোগ করেন, তার স্বামী গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা রাকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় ফেসবুকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তোলেন মাহি।
তবে স্থানীয় ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, জোরপূর্বক দখল করে তার ও মামুন সরকারের জমিতে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে শোরুম গড়েছেন রাকিব সরকার। ওই জমিতে কাজ করতে গেলে রাকিব সরকারের লোকজনই হামলা চালায়।
ইউএইচ/
Leave a reply