জ্বালানি তেল নির্ভর সৌদি আরবের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে। গত ৭ বছরে দেশটির শিল্পখাতে চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন হয়েছে। ‘ভিশন-টুয়েন্টি থার্টি’ বাস্তবায়নে দেশজুড়ে শিল্প কারাখানার প্রসারে ব্যাপক বিনিয়োগের ফল পাচ্ছে সৌদি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার পরিকল্পনা একসময় উচ্চাভিলাষী মনে হলেও এখন তা দৃশ্যমান। খবর ডয়েচে ভেলের।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর একটি সৌদি আরব। মধ্যপ্রাচ্যের পরাশক্তি সৌদি আরবের বার্ষিক আয়ের অধিকাংশই আসে তেল রফতানি থেকে। দেশটির ৭০ ভাগ নাগরিকই কাজ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে। তাদের বেতন গুণতেই চলে যায় আয়ের বড় অংশ।
এদিকে, তেল নির্ভর সৌদির অর্ধেকের বেশি নাগরিকের বয়সই ২৫ এর কম, যারা কয়েক বছর পরই কাজ খুঁজবেন। কাজেই, সামনে প্রয়োজন হবে বিপুল কর্মসংস্থানের।
সংকট শুরু হওয়ার আগেই সমাধানের উদ্যোগ নেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে শুরু করেন ভিশন টুয়েন্টি থার্টি প্রকল্প। বহুমুখী অর্থনীতি প্রণয়নের উদ্যোগকে অনেকের কাছে উচ্চাভিলাসী মনে হলেও এখন তা বাস্তব রূপ নিচ্ছে। দেশটির শিল্পখাতে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।
দেশটির এক বিনিয়োগকারী আব্দুল্লাহ ওবেইকান বলেন, আমাদের খুবই স্থিতিশীল অর্থনীতি, মজবুত অবকাঠামো এবং কর্মদক্ষ জনশক্তি রয়েছে। শিল্পখাতে আমাদের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে। বহুমুখী অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় আমাদের স্পষ্ট রোডম্যাপ রয়েছে। দক্ষ নেতৃত্ব রয়েছে সৌদির। এছাড়া ভিশন বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত মূলধনও আছে।
শিল্প খাতে এ পর্যন্ত ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে সৌদি সরকার, দেশটির কারখানার সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ হাজার। এছাড়া নতুন প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে প্রযুক্তির ওপর।
দেশটির শিল্প ও খনিজ মন্ত্রী বন্দর আল খোরায়েফ বলেন, আমরা প্রযুক্তির ওপর জোর দিচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, প্রযুক্তিই দেশের সব খাতকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নেবে। আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। কাজেই সামনে প্রযুক্তি হবে আমাদের প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি। সৌদি নাগরিকদের বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি করতে কাজ করছি আমরা।
২০২২ সালেই, তেল ছাড়া অন্যান্য পণ্য রফতানি করে সৌদি আয় করেছে ৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি।
এসজেড/
Leave a reply