শিক্ষার্থীর অভাবে জাপানের একের পর এক স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর গড়ে সাড়ে চারশো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে। দেশটির বেশিরভাগ মানুষই বিয়ে ও সন্তান জন্মদানে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে আশঙ্কাজনক হারে কমছে শিশুর সংখ্যা। যদিও নাগরিকদের বিয়ে ও সন্তান লালন পালনের জন্য নানা প্রণোদনা দিচ্ছে জাপান সরকার। খবর রয়টার্সের।
শিক্ষার্থীর অভাবে শুক্রবার (৩১ মার্চ) দেশটির ৭৬ বছরের পুরনো একটি জুনিয়র হাই স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিন ডিগ্রি অর্জন করেন প্রতিষ্ঠানটির শেষ দুই শিক্ষার্থী। এমন হাজারো স্কুল বন্ধের ঘটনা ঘটছে দেশটিতে।
সরকারি তথ্যমতে, প্রতিবছর শিক্ষার্থীর অভাবে জাপানে গড়ে প্রায় ৪৫০টি স্কুল বন্ধ হচ্ছে। ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত ৯ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে বিয়ে করতে ও সন্তান জন্ম দিতে অনীহা জাপানিদের মধ্যে। এতে ব্যাপকহারে কমছে দেশটির জন্মহার। গত বছর ৮ লাখের কম নবজাতকের জন্ম হয়েছে, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন। ফলে একদিকে বাড়ছে প্রবীণ জনসংখ্যা, অন্যদিকে হুমকিতে দেশটির নতুন প্রজন্মের অস্তিত্ব।
এমন পরিস্থিতি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে জাপান সরকারকেও। শিশুদের লালন পালন ও শিক্ষার বাজেট দ্বিগুণ করার পরও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি ঘটছে না। ফলে এবার বিয়ে ও সন্তান জন্মদানে উৎসাহী করতে তরুণ প্রজন্মকে বেতন ভাতা দ্বিগুণ করাসহ বেশকিছু সুযোগ সুবিধা দিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার।
জাপানের শিশু নীতি মন্ত্রী মাসানোবু ওগুরা বলেন, সামনের সাত বছর আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম হার কমে যাওয়ার প্রবণতা রোধ করার শেষ সুযোগ এটা। তাই আমরা আগামী তিন বছরের জন্য বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। সন্তান লালন-পালনের জন্য ভর্তুকি, শিশুদের শিক্ষা খাতে সহায়তা, তরুণ প্রজন্মের বেতন বৃদ্ধি এবং তাদের বিয়ে ও সন্তান ধারণের জন্য প্রণোদনা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
জাপান সরকারের শঙ্কা পরিস্থিতির উন্নতি করা না গেলে, ২০৩০ সালের পর জন্মহার বর্তমানের চেয়ে আরও দ্বিগুণ হারে হ্রাস পাবে।
এএআর/
Leave a reply