গণমাধ্যম পিছিয়ে গেলে দেশ-জাতি পিছিয়ে পড়বে: জাফর ওয়াজেদ

|

গণমাধ্যম পিছিয়ে গেলে দেশ ও জাতি পিছিয়ে পড়বে। তাই সাংবাদিকদের উচিত সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে দেশে স্বার্থে সাহসের সাথে সত্য সংবাদ তুলে আনা বলে মন্তব্য করেছেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।

জাফর ওয়াজেদ বলেন, দেশ নিন্দা মাতৃ নিন্দার মতো পাপ। মায়ের নিন্দা করলে যেমন পাপ হয়। তেমন নিজ দেশের নিন্দা করলে একই পাপ হয়। এ দেশ স্বাধীন করতে এক সাগর রক্ত দিতে হয়েছে। লাখো মায়ের সম্ভ্রম বিলিয়ে দিতে হয়েছে। তাই দেশের জন্য গণমাধ্যমকে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সংবাদপত্র করপোরেটদের হাতে চলে গেছে। সাংবাদিকরা তাদের কথায় চলছে। আগে রাজনীতিবিদরা চালাতো, এখন করপোরেটরা গণমাধ্যম চালাচ্ছে। অনেক কোম্পানি আছে যারা গণমাধ্যম চালু করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য কিন্তু সাংবাদিকদের ঠিক মতো বেতন দেয় না। যা অনাকাঙ্ক্ষিত।

তিনি আরও বলেন, দেশের স্বার্থ ও সাংবাদিকতা এক ও অভিন্ন। মানুষ সবসময় সঠিক তথ্য চায়। ভুয়া নিউজ সমাজকে শেষ করে দেয়। এখন ৫ম শিল্প বিপ্লব চলছে, রোবোটিকস যুগ। তাই সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার।

পিআইবি মহাপরিচালক বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী তথ্য অধিকার আইন প্রণোয়ন করেছে। তথ্য না দিলে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। এ আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে খুবই দরকার। প্রত্যেক সরকারি অফিসে তথ্য কর্মকর্তা রয়েছে। সাংবাদিকদের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, টিভি বা পত্রিকার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নয়। ফেসবুক, অনলাইনকেও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। অনলাইনে অনেক নিউজ করে থাকে যা একপেশে। তাদের জন্য এ আইন। যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়েছে তারা অধিকাংশই অনলাইনে লেখার কারণে। আমাদের এখানে সাইবার অপরাধ অনেক বেড়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতা কারা করতে তা দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আইন ভালো না খারাপ তা নির্ভর করে প্রয়োগের ওপর।

ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ বলেন, এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতীতে বঙ্গবন্ধুকে বিপদে ফেলার জন্য অনেক গণমাধ্যম মিথ্যা খবর প্রচার করেছে। এখনও করছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশকে পেছনে ফেলতে চায় তারা। গণমাধ্যমকে সজাগ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা যারা বিশ্বাস করে না তারা এ দেশকে কীভাবে ভালোবাসতে পারে। বর্তমানে ঘুম থেকে উঠলেই যখন দেখি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার আছে, তখন ভালো লাগে। গণমাধ্যমকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক শাহ নিসতার জাহান কবির বলেন, আগে সাংবাদিকেরা যে মূল্যবোধ ধারণ করত, এখন সেটা দেখা যাচ্ছে না। যে অবস্থায় সাংবাদিকতা যাওয়ার কথা, সে অবস্থায় এখনও পৌঁছায়নি। সাংবাদিকতার সাথে রাজনৈতিক জড়িত হয়ে শুধু মিডিয়া নয়, সমাজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তিনি আরও বলেন, যাইহোক, আমরা চাই জবি সাংবাদিকতার বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেশে আনো ভালো সাংবাদিকতার উপহার দিবে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আপেল মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রে মিডিয়া যত অবাধে কাজ করতে পারবে, দেশ ততো এগিয়ে যাবে।

এছাড়া অ্যালামনাইয়ের সভাপতি মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে জবি সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাইসুল ইসলাম ও প্রভাষক শেখ আবু রায়হান সিদ্দিকীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply