নারী মুক্তিযোদ্ধার বাড়িসহ জমি আত্মসাৎ করলেন আপন বড় ভাই

|

এক নারী মুক্তিযোদ্ধাকে সরকারি বরাদ্দ দেয়া জমি মেরে খেলেন তারই আপন ভাই। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায়। বীর মুক্তিযোদ্ধা শামীমা আক্তারের অভিযোগ, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর একটি বাড়িসহ জমি পান তিনি। সেই বাড়ি দেখভালের দায়িত্ব দেন আপন বড়ভাইকে। সেই ভাই জমির কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।

একাত্তরে ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন লালমনিরহাটে যুদ্ধ করেছেন শামীমা আক্তার গিনি। যুদ্ধ শুরুর পর দশম শ্রেণি পড়ুয়া শামীমা কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেন। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে অংশ নেন যুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হলে তার দলের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়িসহ জমি দেয় সরকার। তখন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহরোডে স্থাপনাটি বরাদ্দ পান তিনি।

শামীমা জানান, বাড়িটি পাওয়ার পর ভাইবোনসহ এখানে ওঠেন। স্বামী ছিলেন সেনাবাহিনীতে। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হতো। এ জন্য বাড়িটি দেখভালের দায়িত্ব দেন বড় ভাই এবিএম শরীফ উদ্দিনকে। মাঝে একবার দেশের বাইরে যাওয়ার সময় ভাইয়ের কাছে রেখে যান তার মুক্তিযোদ্ধা সনদসহ জমির কাগজপত্র। সেই সনদসহ সবকিছুই আত্মসাৎ করেন বড় ভাই শরীফ।

ভুক্তভোগীরা জানান, বেশ কয়েকবছর ধরে জমি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন বড় ভাই শরীফ। সবশেষ গতমাসে বোনের সই জাল করে একটি ডেভেলপার কোম্পানির কাছে জমি বিক্রি করে দেন তিনি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, চলতি মাসের দুই তারিখ রাতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে বাসার আসবাবপত্র ভাংচুর চালায় ডেভলপার কোম্পানিটি। এমনটি নিচে থাকা দোকানের মালামাল ও টাকা-পয়সাও লুট করে নিয়ে যায় তারা।

এ নিয়ে সবশেষ, আদালতের শরনাপন্ন হন মুক্তিযোদ্ধা শামীমা। মুক্তিযোদ্ধার জমি যাতে বেহাত না হয় এনিয়ে নির্দেশনা দেন আদালত। আদালতের নির্দেশ ও পুলিশের উপস্থিতিতে দু’দিন আগে জমির দখল ছেড়ে দেয় ডেভেলপার কোম্পানিটি।

এদিকে, আদালতের নির্দেশের পর লাপাত্তা সম্পত্তি আত্মসাতে অভিযুক্ত ভাই এবিএম শরীফ উদ্দীন। ফোনেও পাওয়া যায়নি তাকে। তার বনানীর বাসায় গিয়ে জানা যায়, চারদিন আগে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি। কোথায় আছেন কেউ জানে না।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply