রাশিদ খানের হ্যাটট্রিক ম্লান করে অবিশ্বাস্যভাবে কলকাতাকে জেতালেন রিংকু সিং

|

রাশিদ খানের হ্যাটট্রিকের পরও জয় পেলো না গুজরাট টাইটান্স। শেষ ওভারে রিংকু সিংয়ের ৫ ছক্কায় ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য এক জয়ের দেখা পেলো কলকাতা নাইট রাইডার্স। গুজরাটের করা ৪ উইকেটে ২০৪ রানের জবাবে শেষ বলে ৭ উইকেটের দারুণ জয় পেয়েছে কলকাতা।

আহমেদাবাদে টস জিতে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিক গুজরাট টাইটান্স। ঋদ্ধিমান সাহাকে সাথে নিয়ে ধীর শুরু করেন শুভমান গিল। ১৭ বলে ১৭ রান করে নারিনের বলে আউট হন ঋদ্ধিমান। ২য় উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত এনে দেন গিল আর সাই সুদর্শন।

দলীয় ১০০ রানে গিলকে আউট করেন নারিন। সাঝঘরে ফেরার আগে ৩১ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। ক্রিজে নেমেই ঝড় তুলেছিলেন আভিনভ মনোহর। অবশ্য ৮ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

দলীয় ১৫৩ রানে নারিনের ৩য় শিকারে পরিণত হয় সাই সুদর্শন। তার আগেই অবশ্য ঝড়ো অর্ধশতক তুলে নেন এই ব্যাটার। ৩৮ বলে ৫৩ রান আসে সুদর্শনের ব্যাট থেকে।

গুজরাটের রান দুইশ রানের কোটা পার করে মূলত বিজয় শঙ্করের ঝড়ে। ২৪ বলে ৫টি ছয় আর ৪টি চারের মারে অপরাজিত ৬৩ রান করে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৪ রানে থামে গুজরাটের ইনিংস।

২০৫ রানের বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে ৩য় ওভারেই রাহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট হারায় কলকাতা। আর দলীয় ২৮ রানে আরেক ওপেনার নারায়ন জাগাদেসান আউট হলে চাপে পড়ে নাইট রাইডার্স। সেখান থেকে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন ভেঙ্কাটেশ আইয়ার আর অধিনায়ক নিতিশ রানা।

১০০ রানের জুটি গড়ে নিতিশ আউট হন জোশেফের বলে শামির হাতে ক্যাচ দিয়ে। আউট হবার আগে কেকেআর অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪৫ রান। যেখানে ছিল ৩টি ছয় আর ৪টি চারের মার।

নিতিশ আউট হলেও রানের চাকা সচল রাখেন ভেঙ্কাটেশ আইয়ার। ৫টি ছয় আর ৮টি চারে ৪০ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন আইয়ার। দলীয় ১৫৪ রানে জোসেফের বলে গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে কিছুটা ফিকে হয়ে যায় কলকাতার জয়ের সম্ভাবনা।

তবে পরের ওভারে পিচে ঝড় তোলেন গুজরাটের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রাশিদ খান। নিজের প্রথম ৩ ওভারে ৩৫ রান দেয়া রাশিদ খান ১৭তম ওভারের প্রথম ৩ বলে ৩ উইকেট তুলে করেন এবারের আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক। প্রথম বলে আন্দ্রে রাসেলের শট প্যাডে লেগে উপড়ে উঠে গেলে গ্লাভসবন্দি করেন উইকেটরক্ষক শিরকার ভারাত। ২য় বলে আরেক ক্যারিবীয় ব্যাটার সুনিল নারিন আউট হন ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে। আর ২য় বলে শার্দুল ঠাকুর পা দেন রাশিদ খানের গুগলিতে।

১৫৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ১৫৪ রানে ৭ উইকেটের দলে পরিণত হয়ে জয়ের সম্ভাবনা একেবারেই শেষের দিকে ছিল কলকাতার। কিন্তু জয়ের নায়ক যে তখনও ক্রিজে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ২৯ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে উমেশ যাদব স্ট্রাইক দেন রিংকু সিংকে। ২০২২ সালে শেষ ওভারে ১৮ রান তুলেও লাখনৌয়ের বিপক্ষে দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। এবারের সমীকরণটা আরও কঠিন হলেও আর ভুল করেননি রিংকু।

আগের ৩ ওভারে ৩৮ রান দেয়া ইয়াশ দয়ালকে একে একে পাঁচ বার মাঠ ছাড়া করে রীতিমত জয় ডাকাতি করে নিয়ে যায় গুজরাটের কাছ থেকে। প্রথম ছয়টি ছিল লং অফের উপর দিয়ে। ২য়টি ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের গ্যালারিতে। ৩য় ছয়টি আবারও লং অফ আর ৪র্থটি লং অনের উপর দিয়ে আছড়ে ফেললে অবিশ্বাস্য এক জয়ের কাছে চলে যায় কেকেআর।

শেষ বলটিকেও লং অনের পথ ধরিয়ে দিলে ৩ উইকেটের দারুণ জয় তুলে নেয় কলকাতা। ৩ ম্যাচে ২য় জয় তুলে নিয়ে টেবিলের দুইয়ে অবস্থান এখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ২১ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়া রিংকু সিং।

/ এ এইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply