মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ ও নেপালের ২২৬ শ্রমিক উদ্ধার

|

উদ্ধার করা বাংলাদেশ ও নেপালের ২২৬ শ্রমিককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:

অসহায় অবস্থায় বসে থাকা বাংলাদেশ ও নেপালের ২২৬ শ্রমিককে উদ্ধার করেছে মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগ। সোমবার (১০ এপ্রিল) সেলাঙ্গর রাজ্যের বান্ডারবারু নিলাই থেকে এক অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। দেশটির মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে একটি টিপ অফ পাওয়ার পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ২২৬ জনের মধ্যে বাংলাদেশি কতজন তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সেখানে দেড়শ’র অধিক বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালের বিদেশি নাগরিকদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (লেবার) নাজমুছ সাদাত সেলিমের সঙ্গে সোমবার রাতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উদ্ধার করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের বাসস্থান ও চাকরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ছাড় দেয়া হবে না। উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের দেখভাল করছে দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়। হাইকমিশন থেকেও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

উদ্ধারের পর দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার বলেছেন, নিয়োগকর্তারা হাউজিং, আবাসন এবং কর্মচারী সুবিধা আইন ১৯৯০ (অ্যাক্ট ৪৪৬) এর ন্যূনতম মান মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনটি পরিচ্ছন্নতা প্রতিষ্ঠান এবং একটি উৎপাদনকারী কোম্পানির জন্য অনুমোদিত বিদেশি শ্রমিক কোটার মাধ্যমে শ্রমিকরা মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছে। শ্রমিকদের প্রায় ৪০ দিন আগে ট্রানজিট আবাসন প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছিল এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো প্রতিশ্রুতি অনুসারে কাজ খুঁজে পায়নি।

তিনি বলেন, ট্রানজিট হোমে নোংরা পরিবেশে শ্রমিকদের রাখা হয়েছিল যা খুবই হতাশাজনক। তিনটি ফ্লোরে তাদের রাখা হয়েছিল। প্রতিটি ফ্লোরে ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট জায়গায় ৬০ জনেরও বেশি লোকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এটি আইনের লঙ্ঘন এবং বিপজ্জনক। অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটলে তাদের পরিণতি কী হবে? তাদের নিয়ে কী ঘটছে সে সম্পর্কে এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শ্রমিকরা খুব চিন্তিত ছিল। কেউ কেউ কান্নাকাটিও করেছে। তাদের বিচলিত মুখ থেকে বোঝা যাচ্ছিল তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। উদ্ধার করা শ্রমিকদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩০ কিলোমিটার দূরে সুবিধাজনক স্থানে তাদের রাখা হয়েছে। তাদের নতুন নিয়োগকর্তা খোঁজা হবে যাদের কর্মীর প্রয়োজন।

শিবকুমার নিয়োগকর্তাদের সতর্ক করে বলেছেন, শ্রম বিভাগ এমন কোনো বিষয় আপোষ করবে না, যা বাধ্যতামূলক শ্রমের দিকে পরিচালিত করবে এবং দেশের ভাবমূর্তিকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করবে। বিদেশি শ্রমিকদের দেশে আনার আগে কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই তাদের চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

এদিকে, জড়িত চার কোম্পানির নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে আইন ৪৪৬ এর ধারা ২৪ ডি অনুসারে চারটি মামলা হয়েছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply